1. : admin :
রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত - দৈনিক আমার সময়

রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪

বছর ঘুরে আবারও শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। জান্নাতের পথ সুগম করার মাস রমজান। ইবাদতের প্রতিযোগিতা করার অপূর্ব সুযোগ এই রমজান। এ মাসে রোজা রাখা যেমন ফজিলতের, ইফতার করাও ফজিলতের, তেমনি ইফতার করানোও ফজিলতের। তারাবির নামাজ আদায় করা, সাহরি খাওয়া, কিয়ামুল লাইল, ইতিকাফ করা সবই ইবাদত। এসব মিলিয়েই ইবাদতের মৌসুম এই মাহে রমজান। রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল ইফতার। মুসলমানদের দিনব্যাপী সিয়াম সাধনার সমাপ্তি হয় ইফতারের মাধ্যমে। নিজে ইফতার করার পাশাপাশি অন্য রোজাদারকে ইফতার করানো অনেক সওয়াবের কাজ। এ বিষয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বেশ কয়েকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন হজরত যায়িদ ইবনে খালিদ আল জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে; তবে এতে রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ জামে তিরমিজি অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে রোজাদারকে ইফতার করালো, তাকে পানাহার করালো, তাকেও রোজাদারের সমান সওয়াব দেওয়া হবে; তবে তার (রোজাদারের) সওয়াব বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।’ তাবারানি
এ ছাড়া এ প্রসঙ্গে ইবনে হিব্বান (রহ.) তার সহিহ্তে বর্ণনা করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে তার উপার্জিত হালাল রিজিক থেকে কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, ফেরেশতারা রমজান মাসের প্রত্যেক রাতে তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন। আর কদরের রাতে হজরত জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে মুসাফাহা করবেন। আর যার সঙ্গে হজরত জিবরাইল (আ.) মুসাফাহা করবেন তার অন্তর কাঠিন্যমুক্ত হবে এবং আল্লাহর ভয়ে কান্নার সময় তার অশ্রু বৃদ্ধি পাবে।’ রোজাদারকে ইফতার খাওয়ানোর ইবাদতের মাধ্যমে আরও অনেকগুলো ইবাদত পালিত হয়। যেমন, নিমন্ত্রিত ভাইদের সঙ্গে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা বাড়ে। যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা জান্নাতে প্রবেশের কারণ। যেমনটি রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা মুমিন হওয়া ছাড়া জান্নাতে যেতে পারবে না। আর পারস্পরিক ভালোবাসা ছাড়া মুমিন হতে পারবে না।’ সহিহ্ মুসলিম
ইফতারের জন্য কেউ কাউকে দাওয়াত করলে করণীয় কী এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর একটি বর্ণনা থেকে জানা যায়, তাকে এক মহিলা ইফতারের জন্য দাওয়াত করল, তিনি তাতে সাড়া দিলেন এবং বললেন, ‘আমি তোমাকে (মহিলাকে) বলছি, যে গৃহবাসী কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তাদের জন্য তার অনুরূপ সওয়াব হবে। মহিলা বলল আমি চাই আপনি ইফতারের জন্য আমার কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন, বা এ জাতীয় কিছু বলেছে। তিনি বললেন, আমি চাই এ নেকি আমার পরিবার অর্জন করুক।’ মুসান্নাফে ইবনে আব্দুর রাজ্জাক
রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করবেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এ কারণেই রোজাদারের সওয়াব কমানো হবে না। এটি বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। ইফতারের দাওয়াত গ্রহণ করা বৈধ ও কল্যাণের কাজ। কোনো অজুহাতে বা নেকি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় ইফতারের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত। আবার কেউ যদি কোনো গরিব রোজাদারকে ইফতারের জন্য আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা করে; তাতে সে ওই টাকায় ইফতারও করল; আবার কিছু বাঁচিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হলো; এটিও ইফতার করানোর অন্তর্ভুক্ত হবে। আর গরিব ব্যক্তিও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে পারস্পরিক দাওয়াত ও সদাচরণ বিনিময়ের তৌফিক দান করুন। অসচ্ছল, গরিব-দুঃখীদের মধ্যে ইফতার ও ইফতারের জন্য অর্থ দান করার তৌফিক দান করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com