ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে ফয়সাল (২২) নামের এক যুবকের বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাতে উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। সে কুট্টাপাড়া এলাকার মোঃ রাকিব মিয়ার ছেলে। পরিবারের দাবী, পুলিশের গুলিতে সে নিহত হয়েছে। আর পুলিশ জানিয়েছে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ হলে স্প্রিন্টারের আঘাতে সে নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে মোটর সাইকেলের সাথে রিকশার ধাক্কা লাগা নিয়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী গ্রামের ইকবাল চৌকিদারের ছেলে আকাশের সাথে একই ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামের সুমনের বাকবিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে আকাশের লোকজন শুক্রবার দুপুরে সুমনের উপর হামলা করে। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যায় কালিকচ্ছ বাজারে ইকবাল চৌকিদারের গোষ্ঠী ও সূর্যকান্দি গ্রামের দুলালের গোষ্ঠীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হয়। নিহতের পরিবারের দাবী, ফয়সাল পড়াশুনার ফাঁকে তার মামা ওসমান হারুনীর রড, সিমেন্টের দোকানে কাজ করত। সংঘর্ষের সময় আতংকিত হয়ে দোকান বন্ধ করার সময় পুলিশ অতর্কিতভাবে নিরপরাধ ফয়সালকে গুলি করে। এতে সে নিহত হয়। এসময় বাজারের কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর করা হয়। পরে খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় সংঘর্ষের ঘটনার পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। নিহত রাকিবের মা হালিমা খাতুন দাবি করেন, আমার ছেলে পুলিশের ছুড়া গুলিতে মারা গেছে। নিহত রাকিবের মামা ওসমান বলেন, রাকিবের বাড়ি কুট্টাপাড়ায় হলেও আমাদের দোকানে থাকতেন। আজ ঝগড়া শুরুর পর দোকানের তালা আমরা লাগাচ্ছিলাম। এসময় পুলিশ এসে আমার ভাগ্নে রাকিবের উপর গুলি করে। তাকে কেন গুলি করা হলো? আমরা তো ঝগড়ার সাথে জড়িতও না? এর বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সংঘর্ষের সময় ককটেলের স্পিøন্টারের আঘাতে ফয়সালের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ৪/৫ জনকে আটকসহ ১০টি অবিষ্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যুর আসল কারণ জানাযাবে।
Leave a Reply