1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
শক্তিশালী কূটনীতির অভাবে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ - দৈনিক আমার সময়

শক্তিশালী কূটনীতির অভাবে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ

নিজেস্ব প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

বিশে^র অন্যান্য দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ দুটি চুক্তির আওতায় রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ সুবিধা মেলে। বিশে^র বড় রপ্তানিকারক দেশগুলো রপ্তানি বাণিজ্যে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে এবং টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করে থাকে। অনেক দেশ একই সঙ্গে সমানভাবে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) সুবিধাও নিচ্ছে। কিন্তু শক্তিশালীকূটনীতি বা বৈদেশিক নীতি না থাকায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ।বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যেরঅন্যতম খাতে হচ্ছে তৈরি পোশাক। আর এ খাতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম পৃথিবীর ৪০টির বেশি দেশের সঙ্গে এফটিএ করেছে। একইভাবে কম্বোডিয়া, ভারত, চায়না, ফিলিপাইনসহ আরো অনেক দেশ এফটিএ ও পিটিএ করে বিভিন্ন দেশে তাদের পণ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনা শুল্ক ও বিনা বাধায় প্রবেশ করাচ্ছে। তুরস্কের ১৮ দেশের সঙ্গে পিটিএ রয়েছে। আর প্রতিবেশী ছোট অর্থনীতির দেশ ভুটানের সঙ্গে শুধু বাংলাদেশের পিটিএ স্বাক্ষর হয়েছে। তার বাইরে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ করা সম্ভব হয়নি। এভাবে যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে মার খাচ্ছে। ব্যবসায়ী এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাতগত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তুস্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে ২০২৬ সালের নভেম্বরে বেরিয়ে গেলে আরো বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত। যদিও সরকার ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা আরো তিন থেকে ছয় বছর পেছানোর জন্য চেষ্টা করছে। আর আগামী ডিসেম্বরেই বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে শুল্ক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (ইপিএ) করতে যাচ্ছে। যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। একই সঙ্গে আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে আরো অন্তত চারটি দেশে বিভিন্ন নামে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় সরকার। পাশাপাশি বাণিজ্য সুবিধা পেতে রিজিওনাল কমিপ্রহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসিইপি) যোগ দেয়ার বাংলাদেশের পরিকল্পনাও রয়েছে।তবেআগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে এলে বর্তমান সরকারের নীতি অনুসরণ করবেি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে কারণ দেশে সরকার পরিবর্তন হলে বৈদেশিক নীতিতেও রাতারাতি পরিবর্তন আসে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনাম হচ্ছে প্রতিযোগী দেশ। ওই দেশটির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭ দেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ভারত, চিলি, চীন, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তানসহ ৪০টির মতো দেশেরএফটিএ আছে। অথচ বাংলাদেশের জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (ইপিএ) করতে ইতোমধ্যে দরকষাকষির পাঁচ দফা আলোচনা শেষ হয়েছে। মূলত এফটিএ ও ইপিএ একই ধরনের। তবে ইপিএ এফটিএর চেয়েও আরো বিস্তৃত ও উন্নয়নবান্ধব এবং উদার। চুক্তির জন্য বাণিজ্য, শুল্ক পদ্ধতি, বাণিজ্য সহজীকরণ, বিনিয়োগ, ইলেকট্রনিক বাণিজ্যসহ ১৭টি খাতের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ, সমপ্রসারণ ও বিভিন্ন দেশের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ), মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি সম্পাদনের নীতি গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশ কিছু দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি (আরটিএ) সম্পাদনে নোগোসিয়েশন বা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে অন্তত চারটি দেশের সঙ্গে সরকারের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। পরবর্তী ধাপে এফটিএ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, চীন, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া ও সৌদি আরবের নামও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এবং ওই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। অন্যথায় রপ্তানি বাণিজ্যে পিছিয়ে যাবে দেশ। এজন্য কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশ বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আরসক্ষমতার অভাবে বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত পিছিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, রপ্তানি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জাপানসহ বেশ কিছু দেশ ও জোটের সঙ্গে ইপিএ, এফটিএসহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের নভেম্বরের আগেই বেশ কিছু দেশের সঙ্গে সরকার এ ধরনের চুক্তি করতে চায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com