লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার কৃষকদের পান চাষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। উৎপাদন খরচ কম ও বহুবর্ষজীবী হওয়ায় পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে। অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বৃষ্টিপাত ও সুষম সার প্রয়োগের ফলে এবার পানের উৎপাদনও হয়েছে ভালো। এ অঞ্চলের পান সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও রয়েছে বেশ ভালো। এখানকার উৎপাদিত পান জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে।
এক সময় শুধু উপজেলার দু’ইটি ইউনিয়নের কিছু এলাকায় পান চাষ হলেও এখন ছড়িয়েছে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝেও। পানের বরজে ভাগ্যের চাকা ঘুরে হাসি ফুটেছে অনেক কৃষকের মুখে। কৃষি বিভাগ বলছে, আগ্রহী পান চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছরই রায়পুরে বাড়ছে পানের চাষ। গত বছর ৪ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। যা এবার আরও বেড়ে ৫ হেক্টরে দাড়িয়েছে। এক সময় শুধু উপজেলার দু’ইটি ইউনিয়নের কিছু এলাকায় পান চাষ হলেও এখন ছড়িয়েছে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝেও। পান চাষে খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায়, দিন দিন এ অঞ্চলে পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে একবার আবাদকৃত পানের বরজ থেকে ৯-১০ বছর পর্যন্ত পান তোলা যায়। এবার উৎপাদিত পান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।
ক্যাম্পেরহাট এলাকার নারায়ণ বলেন, ‘আমগো গ্রামের সত্তর শতাংশ ঘরেই পানের বরজ আছে। এক কুর (একর) জমি থেকে প্রতি সপ্তাহে দুইবার করে ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রি করি। বছরে প্রায় দেড়-২ লাখ টাকা আয় হয়। একবার বরজ তুলতে পারলে ১০-১৫ বছর থাকে। কোনো বালা-মুসিবত না হলে পানের বরজে তেমন কোনো খরচ হয় না।’
পাইকারি ব্যবসায়ী আলী আজম বলেন, ‘ভোরে উপজেলার হায়দগঞ্জ, ক্যাম্পেরহাট, নতুন বাজারসহ ৪টি পানের বড় বাজার বসে। একদম সতেজ পান পাওয়া যায়। এসব বাজারের পানের চাহিদাও বেশি। এখান থেকে পাইকাররা পান কিনে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠায়।’
রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘রায়পুরের উৎপাদিত পান বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। চাহিদাও বেশ ভালো। আমাদের কর্মীরা পান চাষিদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এবার উৎপাদিত পান থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হবে। তবে পান চাষিদের সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় আনা গেলে কৃষকরা পান চাষে আরও ভালো করবেন।
Leave a Reply