চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় আগুনে পুড়েছে শিলক দিঘিরপার বাজারের ৭টি দোকান। এ ঘটনায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রথিমিকভাবে জানা যায়।
সোমবার (২ মে) ২০২৩ইং তারিখ ভোর রাত ২ টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের দিঘীরপাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
সরজমিনের পরিদর্শনে দেখা যায়, সাতটি দোকানেই আগুনে পুড়ে কয়লাতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও আগুন নিভাতে এগিয়ে আসা একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ সোহেল (৩৮) নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে একই এলাকা বাসিন্দা নুর বক্সের ছেলে মোঃ শাহ আলম মাস্টার বলেন, আনুমানিক রাত দেড়টার সময় স্থানীয় টুনু পাগলা নামে পরিচিত এক ব্যক্তির চিৎকার চেঁচামেচিতে অফিস থেকে বাইরে এসে দেখি দিঘীরপাড় লতিফ মেম্বারের দোকানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতেছে, এ সময় প্রথমে আমি দিঘীরপাড় মসজিদে অ্যালার্ম করি, পরে ফেসবুক লাইভে আসলে এলাকার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশগ্রহণ করে। এর ১৫-২০ মিনিট পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। এ সময় দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আল্লাহর অশেষ রহমত ও সকলের সহযোগিতায় দিঘীরপাড় বাজার পরিপূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে বেঁচে যায়, কিন্তু ৭টি দোকান আগুনের লেলি শিখায় ব্যাপকভাবে প্রতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন বাহাদুর শাহ রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী এতিন আলী, খাজা গরীবের নেওয়াজ ফার্নিচার মার্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ মেম্বার, আজগর আলীর রাইস মিল, নুরুল ইসলামের ফার্নিচারের দোকান, সিফাত স্টোর মোদির দোকানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইয়াকুব সও:, পল্লী চিকিৎসক ডাক্তার আবু তাহেরের ফার্মেসি, মোহাম্মদ নাসের আলমের কাপড়ের দোকান।
রাঙ্গুনিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সুমন বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় ৫টি দোকান পুড়ে যায় এবং পার্শ্ববর্তী ২টি দোকান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আমরা বলতে পারব ঠিক কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দিঘিরপার বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ মেম্বার বলেন, কে বা কারা প্রতিহিংসার বশবতি হয়ে রাতে অন্ধকারে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে, এতে আমার প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বাহাদুর শাহ রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী এতিন আলী ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তরা পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তাদের নগদ অর্থসহ ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গনি ওসমানী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবায়দুল ইসলাম, শিলক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল মান্নান চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বাদশা, শিরক ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোঃ পারভেজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ প্রমুখ।
এ সময় গণমাধ্যমকে দেওয়ায় বিবৃতিতে, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবায়দুল ইসলাম বলেন, রাত দুটার দিকে আগুন লাগার বিষয়টি জানার পর কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হই, এতে ৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ঠিক কোথা থেকে আগুনে সুত্রপাত হয়েছে এখনো জানা যায়নি, যেহেতু চায়ের দোকান ছিল চায়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এছাড়াও ফার্নিচারের দোকানের পিছনে থেকে সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply