1. : admin :
রমজানকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার কলার কদর বেড়েছে - দৈনিক আমার সময়

রমজানকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার কলার কদর বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩

 

এ,জে, সুজন কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

পবিত্র মাহে রমজান মাস ঘিরে এখন জমজামাট হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ কুষ্টিয়ার মধুপুর কলার  হাট। দেশব্যাপী এই এলাকার কলার রয়েছে প্রচুর চাহিদা  প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৫০ ট্রাক কলা সরবরাহ হচ্ছে কুষ্টিয়ার এই হাট থেকে। দাম ভালো পাওয়াইয় এতে করে যেমন লাভবান হচ্ছেন এই অঞ্চলের কৃষক। ঠিক তেমনি ভালো বিক্রির কারণে খুশি এখানকার ব্যবসায়ীরাও।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত মধুপুর কলার হাট। মাসের ৩০ দিনই বসে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই কলার হাট। খুব সকাল থেকেই মধুপুর হাটে সবরি, চাপা সবরি, সাদা সবরি, জয়েন্ট কলা, চাম্পা কলাসহ বিভিন্ন প্রকারের কলা নিয়ে আসতে থাকে কুষ্টিয়াসহ আশপাশের ছয় জেলার কৃষক ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা।

কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিসের দাবি, লাভজনক হওয়ায় কলা চাষে বিপ্লব ঘটাতে নিরলসভাবে কৃষকের পাশে থেকে কাজের উৎসাহ দিয়ে করে যাচ্ছেন তারা।

কলাচাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেশি পরিমানে লাভ হওয়ায় তারা নিয়মিত ভাবে এই কলার চাষ করে থাকেন। আর পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে অন্যান্য সময়ের চাইতে বেড়েছে কলার চাহিদা। চাহিদা বাড়ার কারণেই এই কলার বাজারও বেশ চড়া এখন। তাই এই হাটে কলা বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন তারা।

কুষ্টিয়ার বিত্তিপাড়া এলাকার কলাচাষি রফিকুল জানান, তিনি প্রায় ১৫ বছর যাবৎ কলার আবাদ করেন। প্রতিবছরই তিনি বিশ থেকে বাইশ বিঘা জমিতে চাপা কলার আবাদ করে থাকেন। এই কলা খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা নেক বেশি। তাতে করে বছরে তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে ১০ লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারেন।

২০ বছর ধরে কলার আবাদ করছেন কুষ্টিয়ার লক্ষ্মীপুর এলাকার চাষি খোকন। তিনি জানান,  কালবৈশাখী ঝড় ছাড়া কলা আবাদে ঝুঁকি খুবই কম। তাছাড়াও কলা আবাদে পরিশ্রম এবং খরচ দুটোই কম। এমনিতেই এখন কলার চাহিদা এখন অনেক বেশি তার ওপর  রমজান মাস কয়েকদিন পরেই সেই কারণে বাজারে কলার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। যে কলা কয়েকদিন আগেও ৬ থেকে ৮ টাকা হালি বিক্রি হয়েছে। রমজানকে ঘিরে সেই কলা এখন ১২ থেকে ১৫ টাকা হালি পাইকারি ভাবেই বিক্রি হচ্ছে। আর এই হাটে কৃষকেরা সরাসরি কলা বিক্রি করতে পারে যার কারণে তারা নিজেরাই লাভবান হয়।

প্রতিদিনই খুব সকালেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কলা কিনতে মধুপুর এই হাটে আসে ব্যাপারীরা। এখানকার কলা খুব সুস্বাদু। দেশব্যাপী এর সুনামও চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। মধুপুর হাটের কলাই লাভও হয় ভালো। এ জন্যই দীর্ঘদিন ধরে এখান থেকে কলা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকেন বলে জানান তারা। তবে কৃষকেরা ভালো দাম পেলেও এবার কলার দাম অনেক বেশি বলেও দাবি তাদের।

কবির হোসেন নামের ঢাকা থেকে আসা একজন ব্যাপারী বলেন, এখানকার মাটি কলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সেই সাথে স্বাদেও খুব ভালো এবং এখানকার কলায় ক্যামিকেলের ব্যবহার হয়না  বলে এর চাহিদা ভালো। সেই কারণেই নিয়মিত ভাবে এখান থেকে কলা কিনে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করি।

মধুপুর হাটের ইজারাদার কাজী আব্দুস সাত্তার জানান, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চলে আসছে এই মধুপুর কলার হাট। আঁকার ভেদে এক কাঁধ কলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০/ ৪৫০ টাকাই, সব মিলিয়ে দিনে অন্তত ২৫ লক্ষ টাকার কলা বিক্রি হয় এই হাটে। বর্তমানে এই কলার হাট থেকে বছরে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা রাজস্ব পায় সরকার। তাই এখানে আসা দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যাপারী ও কৃষকের নিরাপত্তা দিতে তারা সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন নিরঅলস ভাবে। তবে এই হাটের জায়গা বৃদ্ধিসহ সংস্কারে দাবি রয়েছে তাদের।

 

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি অধিদপ্তর অফিসের তথ্যমতে, জেলায় মোট প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে এবার কলার আবাদ হয়েছে।

 

কুষ্টিয়া কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এখানকার কলা অত্যন্ত সুস্বাদু ও সহজ লোভ্য একটি রসালোও সুস্বাদু ফল। কুষ্টিয়া জেলায় উৎপাদিত কলার দেশব্যাপী অনেক শুনামও চাহিদা রয়েছে। মধুপুর কলার হাট থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিন প্রচুর কলা সরবরাহ হয় তাই এখানকার কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। রসালো এই ফলের বিস্তার ঘটাতে ও প্রসার ঘটাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কুষ্টিয়া কৃষি বিভাগ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com