ভারতের জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ শোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গীতে পরিচিতি পাওয়া গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে বিতর্ক – সমালোচনার যেনো অন্ত নেই। বিভিন্ন সময় নানা মন্তব্য ও ঘটনার কারণে বারবার সমালোচিত হয়েছেন এই তরুণ গায়িকা। কিছুদিন আগেই নিজের সঙ্গীত ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে জানিয়ে মাদককে দায়ী করেন নোবেল। এই মন্তব্যের মাত্র কয়েকদিন পরেই কুড়িগ্রামে এক অনুষ্ঠানে নোবেল গান গাইতে গিয়ে মাতলামি ও অসংলগ্ন আচরণ করে আবারও বিরূপ সমালোচনার পাত্র হলেন।
জানা যায়, মঞ্চে নোবেলের মাতলামি, অসংলগ্ন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা। একপর্যায়ে তারা জুতা ও পানির বোতল ছুঁড়ে মারতে থাকেন তাকে। পরে আয়োজক কর্তৃপক্ষ মঞ্চে থেকে সরিয়ে নেয় নোবেলকে। এবার ওই ঘটনা নিয়ে নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ মুখ খুলেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলছেন, নোবেল আগে নামাজ পড়তো। অথচ এখন গানের মঞ্চে উঠে মাতলামি করে!
সালসাবিল কথায় কথায় জানান, মঞ্চে উঠার আগে নামাজ পড়া বাদ যেতো না। এমনকী সারগামাপা অনুষ্ঠানেও সবাইকে বসিয়ে নামাজ পড়ে তারপর মঞ্চে উঠেছে। নোবেলের এমন বদলে যাওয়া মানতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, সমস্যাটা যদি শারীরিক হতো, তাতে হয়তোবা মানুষ কমেন্টে দোয়ার মাহফিল বসাতো।
তিনি আরও জানান, নোবেলের সমস্যাটা মানসিক, তাও আবার মাদক ঘটিত। যেরকম মানুষ নোবেল কোনো দিনই প্রথম থেকে এই রকম ছিলো না। এটা আমার নিজেরই দীর্ঘদিনের দেখা, শো’তে যাবার সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে নোবেলের নামাজ পড়া। সারেগামাপা চলাকালীন পুরো শুটিংয় ইউনিটকে বসিয়ে রেখে নামাজ পড়া আর সবার সাথে অমায়িক ব্যাবহার। সালসাবিল আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আর সে মানুষটা এখন নিজের কার্যকলাপে নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না। নিজের নিরহংকার রূপকে ঢেকে পরিবার ও ভক্তবৃন্দদের কাছে নিজের অস্বাভাবিক রূপ প্রকাশের দীর্ঘ প্রচেষ্টা।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০ বর্ষপূর্তি উদযাপন করতে গায়ক নোবেলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। রাত ৯টার দিকে তার গান গাওয়ার কথা থাকলেও তিনি মঞ্চে ওঠেন ১১টা ২০মিনিটে। মঞ্চে উঠে নোবেল তার চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রেখে বলেন, দ্বিতীয় বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগে এসেছিলাম তোমাদের সাথে দেখা হয়নি। সুদুর ইন্ডিয়ার বর্ডার লাইনে থেকে গেছিলাম। তোমাদের কারও সাথে দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো আলহামদুলিল্লাহ।
জানা যায়, এরপরই আমার চশমাটা কই বলে চিৎকার করেন নোবেল। পরে চশমা পেয়ে চোখে পড়ে ‘সে যে আমার জন্মভূমি’ গান পরিবেশন করেন। ওইসময় তিনি মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড আছড়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর তিনি স্টেজে দু’পা তুলে প্যারেড করার মতো লাথি পেরে পরনের প্যান্ট দু’হাত দিয়ে ঠিক করে গান ধরেন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’। গানের এক পর্যায় অসলংগ্ন আচরণ করতে করতে বসে পড়েন তিনি। ওইসময় নোবেলের অমন আচরণের (মাতলামি) কারণে ক্ষেপে গিয়ে দর্শকরা জুতা ও পানির বোতলের ঢিল ছুঁড়ে মারেন তার দিকে। পরে স্টেজে থাকা কয়েকজন এবং আয়োজকবৃন্দ নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
Leave a Reply