নিজস্ব প্রতিনিধি : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ে ৫ আগষ্ট কুষ্টিয়ায় পুলিশের গুলিতে ৮ জন নিহত হয়েছেন। এরপর থেকেই শুরু হয় মামলা। এখন পর্যন্ত কুষ্টিয়া মডেল থানা ও আদালতে ৬ টা হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যক্তি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক প্যানেল মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলন। এরআগে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা সরে দাঁড়ালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় বেশ কিছু লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এরপর রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা,সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এছাড়া শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর হামলা ও মামলার ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৪ টায় শহরের কবুতর চত্বরে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বহু ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। তারপরও থেমে নেই চাঁদাবাজি। আগে মানুষ বাড়িঘর করলে সেখানে গিয়ে চাঁদা আদায় হত,এখনো চাঁদাবাজি চলছে। কিন্তু ধরন পাল্টিয়েছে মাত্র। তিনি বলেন,হাসিনার পতনের পরে মামলার ভয় দেখিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। এছাড়া প্রতিহিংসা, হয়রানি, ব্যক্তিগত আক্রোশে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে দেওয়া হচ্ছে মামলা। টাকা না দিলে মামলা, টাকা দিলে মামলা থেকে রেহাই। এভাবে চলতে পারে না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন অনেক আওয়ামীলীগের সঙ্গীরা বিএনপিতে যোগ দেয়ার চেষ্টা করবে। টাকার বিনিময়ে তাদের অপরাধগুলো মুছতে চাইবে। টাকার বিনিময়ে এগুলো করলে দল ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমানের সুনাম নষ্ট হবে। তিনি আরো বলেন,প্রকৃত অপরাধী যারা তাদের বিরুদ্ধে একটা কেন বিশটা মামলা হলেও আমাদের সহযোগিতা ও সমর্থন থাকবে। দলের ট্যাগ লাগিয়ে যারা এই অপকর্মগুলো করছে তাদেরকে সতর্ক করে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আপনারা এমন কোনো অপকর্ম করবেন না যাতে করে বিএনপির উপরে মানুষের আস্থা হারায়। প্রশাসনের প্রতি জোরদাবি করে বলছি, মামলা দিলেই আপনারা গ্রহন করবেন না,সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে মামলা এন্ট্রি করবেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে বিএনপির এই নেতা শহরের প্রতিটি রাস্তায় মোটরসাইকেল শোডাইন করে হ্যান্ড মাইকে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করেন। এসময় প্রায় তিন শতাধিক মোটরসাইকেল র্যালিতে অংশগ্রহণ করে। ১৯ বার জেল খাটা মহিউদ্দিন চৌধুরী মিলন কুষ্টিয়া বিএনপির একজন প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা। ১৯৮৫ সালে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে তার হাতেখড়ি। এরপর ১৭ বছর শহর যুবদলের সভাপতি, ছিলেন। জেলা যুবদলের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ৫ বছর। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি টানা ২৪ বছর কুষ্টিয়া পৌরসভায় কাউন্সিলর ও ১১ মাস প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের সাথে জড়িত আছেন। এছাড়া ৫ আগষ্ট রাত থেকে কর্মীদের নিয়ে তিনি মন্দির, সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় সারারাত জেগে পাহাড়া দিয়ে প্রশংসা কুড়ান।
Leave a Reply