1. : admin :
ডিপিডিসিতে বিদ্যুৎ চুরি রোধসহ কোম্পানি সচিব আসাদুজ্জামানের নানা উদ্যোগ - দৈনিক আমার সময়

ডিপিডিসিতে বিদ্যুৎ চুরি রোধসহ কোম্পানি সচিব আসাদুজ্জামানের নানা উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক 
    প্রকাশিত : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩

 

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর স্পেশাল টাস্কফোর্স পরিচালনার মাধ্যমে ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় গ্রাহকের দোরগোড়ায় গিয়ে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা উদঘাটন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণসহ বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অনিয়ম রোধ করা ও বিদ্যুৎ চুরির ফলে হারানো রাজস্ব পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন ডিপিডিসির কোম্পানি সচিব মো. আসাদুজ্জামান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর যাবৎ ডিপিডিসির আওতাভূক্ত এলাকায় প্রচুর অভিযান পরিচালনা করে বিদ্যুৎ চুরির নানা ঘটনা উদঘাটন করা হয়েছে। এতে ব্যাপক পরিমাণে চুরি হওয়া এনার্জি ইউনিট পুনরুদ্ধার হয়েছে। যেখানে এনওসিএস দপ্তরসমূহের অগোচরে বিদ্যুৎ চুরি হত, সেখানে বিদ্যুৎ চুরি ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়েছে। এবং একই সাথে সিষ্টেম লস হ্রাসসহ ডিপিডিসি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। অভিযানকৃত এলাকার গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ চুরির প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। গ্রাহক স্বপ্রনোদিত হয়ে টাস্কফোর্স টীমের নিকট তথ্য প্রদান করছে। এবং উক্ত অনিয়মের সাথে জড়িত দালাল কিংবা মিটার রিডারদের ব্যাপারেও গ্রাহকরা সতর্ক হয়েছে। একই সাথে প্রচুর অবৈধ মিটারও জব্দ করা হয়েছে। যা ইতোপূর্বে হয়নি।

যেসকল এনওসিএস দপ্তরে বিদ্যুৎ চুরির বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়, সেসব স্থাপনায় টাস্ক ফোর্স কর্মীরা অতিদ্রুত অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে, স্পেশাল টাস্কফোর্সের ওপর এনওসিএস দপ্তরসমূহের আস্থা এবং নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহককে সরাসরি বিদ্যুৎ চুরি করতে সহায়তা করার অপরাধে ইতোমধ্যে কাস্টমার সাপোর্ট সর্ভিসের আওতায় আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে ঠিকাদার কর্তৃক নিয়োগকৃত ৬৮ জন কর্মীকে অপসারণ এবং ডিপিডিসির ৭ জন কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, গত ৩ বছরে প্রায় ৪৮ লাখ এনার্জি ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা উদঘাটিত হয়েছে, যার বিপরীতে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। যা ডিপিডিসির ইতিহাসে রেকর্ড। এছাড়াও এপর্যন্ত প্রায় ২৫০০ মিটার পরিদর্শন করে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবং বিদ্যুৎ চুরির দায়ে ৩৫ জন গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে, যা বর্তমানেও চলমান। এছাড়া, বিদ্যুৎ চুরি, বিদ্যুতের দালাল এবং দুর্নীতিবাজ সিএসএস কর্মীদের ব্যাপারে সতর্ক করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এনওসিএস দপ্তরে, হটলাইন, ওয়েবসাইট এবং স্পেশাল টাস্কফোর্সে দপ্তরে যোগাযোগ করতে উৎসাহিত করা হয়।

জানা গেছে, বিলুপ্ত ডেসা নামক ডিপিডিসির একটি সেল দীর্ঘ দিন ধরে চলমান ছিল যেখানে ডেসা আমলের বেশ কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, পেনশন সংক্রান্ত জটিলতা ছিল। মো. আসাদুজ্জামান তার দূরদর্শিতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সুপারিশ করে এ সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। পরে, মন্ত্রনালয় ডেসা সেলকে একেবারেই বিলুপ্ত করে। সেই সাথে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল মোকাবিলা করে ডিপিডিসি পক্ষে রায় আনা সম্ভব হয়। যার ফলে দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসন হয়, যা প্রতিষ্ঠানের গুড গভর্নেন্স-এ ভূমিকা রাখছে৷

মো. আসাদুজ্জামানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ায় প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা পেনাল বিল আদায় করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, ডিপিডিসির কামরাঙ্গীরচর উপ-কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে ক্ষতিপূরণ প্রদান সংক্রান্ত মামলায় রায়ের মাধ্যমে প্রায় ৯ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে। এবং ‘কেস ম্যানেজমেন্ট ও মনিটরিং সফটওয়্যার’-এর মাধ্যমে ডিপিডিসি’র সকল মামলার তথ্য নিয়মিতভাবে হালনাগাদ করার কারণে মামলা সংক্রান্ত বিষয়াদিতে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে।

ডিপিডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসায় ১ম বারের মতো কম খরচে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ঢাকার স্বনামধন্য ৫ টি হাসপাতাল (ল্যাব এইড, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটাল, ইউনাইটেড হসপিটাল, এভার কেয়ার ও আসগর আলী) এর সাথে চুক্তি করা হয়েছে, যা আগে কখনও হয়নি। এছাড়া, ১ম বারের মতো মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ ড্যাশ বোর্ড আপগ্রেড করা হয়েছে। এছাড়া আইসিসিডিডিআরবি’র সহায়তায় সব কর্মচারীদের ব্লাড স্ক্রিনিং করা হয়, যা ছিল ডিপিডিসিতে প্রথম। কোভিডকালীন সময়েও ঢাকার সব হাসপাতালের সাথে চুক্তি করা হয়। যার ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিডিসির কোম্পানি সচিব মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি, সেটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে আমরা জনগণের সেবক। সেই দায়িত্বের জায়গাটুকুই পালন করার চেষ্টা করেছি। ডিপিডিসির চেয়ারম্যান-এর সঠিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক উৎসাহ ও আকুণ্ঠ সহযোগিতা ছাড়া এসব উদ্যোগের সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, নিজের কাজের ব্যাপারে তিনি খুবই আন্তরিক৷ আশা করছি ভবিষ্যতেও তিনি এটি অব্যাহত রাখবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com