1. : admin :
গুলশান-বনানী’তে কিছুতেই থামছে না ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের দৌরাত্ম ! - দৈনিক আমার সময়

গুলশান-বনানী’তে কিছুতেই থামছে না ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের দৌরাত্ম !

নিজস্ব প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩

 

রাজধানীর অভিযাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান-বনানী। এই এলাকাগুলোতে রয়েছে অভিজাত মানের হোটেল,কূটনৈতিক মিশন সহ হেয়ার কাটিং সেলুন,বিউটি পার্লারের মতো অসংখ্য ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাছ থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়েই এসব এলাকায় নিজেদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি সময়ে গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় ভুঁইফোড় ও হলুদ সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিছুতেই থামছে না সাংবাদিক নামধারী এই সমস্ত ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের দৌরাত্ম! এর আগে বেশ কিছু জাতীয় পত্রিকায় বিষয়টি প্রচার হলে থেমে যায়
ঐ চক্র।গত ১৩ জুলাই ২৩ ইং ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সুমন নামের এক ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও গুলশান থানায় জিডি হলে থেমে যায় ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের চাঁদাবাজি।

সাম্প্রতিক সময়ে আবার ও এসব অনুমোদনহীন আইপিটিভি (ইউটিউব), নিউজ পোর্টাল, যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার,আইডি কার্ড ঝুলিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলোতে শুরু করে পূনরায় চাঁদাবাজি। যাতে করে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ঐসকল সাংবাদিকদের নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা। তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী থেকে পেশা পরিবর্তন করেই বনে যাচ্ছেন সাংবাদিক।তাদের মধ্য অন্যতম হলেন রিপন রুদ্র ও শাওন নামে দুইজন কথিত সাংবাদিক।

চিকিৎসকের সহকারী উকিলের সহকারী থেকে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে ওঠা এদের দাপটে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

এদের প্রত্যেকের মূল হাতিয়ার হিসেবে রয়েছে একটা স্মার্ট ফোন এবং মোটরসাইকেল। যা নিয়ে গুলশান-বনানী এলাকায় সাংবাদিক পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।

অনিবন্ধিত পোর্টাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর কিছু মাধ্যমে এসব কথিত সাংবাদিকরা সেসব প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখিয়ে স্থানীয় কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা তুলে যাচ্ছেন।

গুলশানের বেশ কয়েকজন ক্ষুদে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সরজমিনে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে আমাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে তারা। এমন সব গণমাধ্যমের নাম বলে, যার নাম কেউ কখনও শোনেনি। কিন্তু তারা বড় মাপের সাংবাদিক হিসেবে নিজের পরিচয় দেন। এই কথিত সাংবাদিকদের ভাষ্য মতে,তাদের কথায় দেশের পুলিশ থেকে শুরু করে সকলে তাদের ইশারায় চলে।

রিপন রুদ্র,কর্মক্ষেত্র নামের একটি নাম সর্বোচ্চ পত্রিকার নাম ব্যবহার করতো এর পর খবরাখবর নামে আরো একটি পত্রিকার নাম ব্যাবহার করতো ।বর্তমানে ঐ সাংবাদিক একুশের বানী নামের একটি পত্রিকার নাম ব্যবহার করে চাঁদাদাবী করে বলে জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী একাধিক ব্যাবসায়ী । ব্যাবসায়ীরা জানান, যে পত্রিকাগুলোর নাম কখনো কেউ শোনেনি এবং পত্রিকা গুলো মার্কেটে কখনো কিনতেও পাওয়া যায়না! যখন যার কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে হবে তখন তার নামে ভুলভাল নিউজ বানিয়ে প্রিন্ট দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে এই রিপন রুদ্র নামের কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। রয়েছে মানব পাচারের মত ভয়ংকর অপরাধের অভিযোগ! মডেলিং এবং নায়িকা বানানোর আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সুন্দরী রমণীদের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে সেই সমস্ত ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে একাধিক নারীর কাছ থেকে।

অপর জন হলেন শাওন (রুপবানী) , খোঁজ নিয়ে জানা যায় উনি জজ কোর্টের একজন আইনজীবীর সহকারী । কথিত সাংবাদিক রিপন রুদ্র এবং এই শাওন চৌধুরীর চাঁদাবাজির কৌশল অনেকটা একই রকমের বলে জানান একাধিক ব্যবসায়ী । এছাড়াও মুক্তা, আলাউদ্দিন, সুমন, শুভ, শারমিন আক্তার সায়মা- এমন বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নাম পরিচয় বলেন। যাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কোন নিবন্ধন নেই। সেই সঙ্গে, এরা কেউই কখনও প্রতিষ্ঠিত কোন গণমাধ্যমে কাজ করেনি। এই চক্রটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যাবহার করতে অভ্যস্ত।

এই নাম সর্বস্ব সাংবাদিকদের জন্য প্রকৃত সাংবাদিকেরাও অনেক সময় হয়রানির মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ ধরণের প্রতিষ্ঠানগুলো অচিরে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে প্রকৃত সাংবাদিকতার পথ তৈরিতে সহায়তার আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ীরা।এরই মধ্য গত ১১ নম্ভেবর-২৩ ইং চাঁদাবাজীর মামলায় ডিএমপি ভাটারা থানায় গ্রেফতার হোন রুপবাণীর শাওন।

এ বিষয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুঁইফোড় অনিবন্ধিত পত্রিকার কোনো লোক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি করলে ৯৯৯ ফোন দিয়ে ধরিয়ে দিন।তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।

এই বিষয়ে গুলশান থানা অফিসার ইনচার্জ বিএম ফরমান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সুমন নামের এক ব্যবসায়ীসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী আমাদের কাছে লিখিত ও মোখিক অভিযোগ করেছেন এই বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে তদন্ত শেষে আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পারবো।
উক্ত বিষয়ে কঠিত সাংবাদিকদের নাম্বারে একাদিক বার কল দিলে ও কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com