# বৈষম্য নিরসনের কথা হলে মন্দিরে হামলা কেনো?- প্রশ্ন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের
সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে কক্সবাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
সংখ্যালঘু ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে পর্যটন নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায়, ও হিন্দুদের বাসাবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করছে দুর্বৃত্তরা। হামলা প্রতিরোধে কেউ এগিয়ে আসেনি। চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যা এই সময়ে কাম্য হতে পারে না।
তারা বলেন, বৈষম্য নিরসনের কথা বলা হলেও এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট ৮দফা দাবী জানান সংখ্যালঘু ছাত্র ঐক্য ।
৮দফা দাবীসমূহ:
১. গত কয়েকদিনে দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর ভাঙচুর, লুটপাট নির্যাতনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তপূর্বক দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা এবং নিরীহ সংখ্যালঘু ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান।
২. সীমান্ত সংলগ্ন যেসব অঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি ছেড়ে সীমান্তে চলে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাদের উপযুক্ত নিরাপত্তা ও সম্মানের সহিত নিজ ঘরে ফিরিয়ে আনা। প্রয়োজনবোধে সরকারি উদ্যোগে তাদের গৃহ নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা।
৩. হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে পূর্ণাঙ্গ রূপে হিন্দু ফাউন্ডেশন হিসেবে নিবন্ধন এবং তার সামগ্রিক কর্মপরিসর ও অর্থবরাদ্দ বৃদ্ধি করে, কোনো প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ব্যক্তি ব্যতীত নিরপেক্ষ ও সনাতনীদের প্রকৃত শুভচিন্তক ব্যক্তিদের দ্বারা পুনর্গঠন।
৪. সরকারের সকল পর্যায়ে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
৫. বিদ্যমান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ন্যায় পৃথক, স্বতন্ত্র “জাতীয় সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন” গঠন, যা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতনের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করে আইনি প্রক্রিয়ায় সহায়তাপূর্বক ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সাহায্য করবে।
৬. সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনায় বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান এবং আক্রমণের ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। পরিস্থিতি পূর্ণরূপে স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে এই ব্যাপারে দায়িত্ব প্রদান।
৭. বিশেষ “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের মাধ্যমে বিশেষ গুরুত্বের সাথে সংখ্যালঘুদের মন্দির, ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাটের দ্রুততম সময়ে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গ্রহণ।
৮. সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও উৎসব নির্বিঘ্নে যথাবিধি পালন হওয়ার ব্যাপারে উপযুক্ত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারন সম্পাদক দীপক দাশ বলেন- তারা নির্ঘুম রাত পার করছেন। আতঙ্ক নিরসনে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েও পাচ্ছেন না।
এসময় সংখ্যালঘু ছাত্র ঐক্য কক্সবাজারের সমন্বয়ক রাব্বি বণিক,শিপ্লব দাশ,রুপা দে,শুভজিত রুদ্র,তনয় দাশ সহ অন্তত পাঁচ শতাধিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-জনতা অংশ নেয়।
বক্তারা এসময় আগামী দুই দিন এই প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এর আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং যারা হামলায় নিহত হয়েছেন তাদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
Leave a Reply