রাজধানী উত্তরার ৯ নং সেক্টরস্থ ৬ নং রোডের নাভানা সিএনজি ভাই ভাই অটো মোবাইলস গ্যারেজে গত ২৬ অক্টোবর’২৪ এর আনুমানিক রাত ৯টা ৩০ মিনিটে মো: রাসেল ও সুজন নামে দুই কিশোর কে ডেকে এনে চোর সন্দেহে শিকলে বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন করে।
নির্যাতনের খবর পেয়ে রাসেলের মা রাশেদা পাগল মতো ছুটে এসে নাভানা সিএনজি গ্যারেজে এসে দেখেন তার ছেলে মো: রাসেল কে শিকলে বেধে রাখা হয়েছে। ছেলের আর্তনাদে বেহুশ হয়ে পরে, তখন গোলাম কিবরিয়া (২৪) আনোয়ার হোসেন (২৮) ও নূর আলী (১৯) সবুজ দৌড়ে এসে রাশেদাকে বলে তোমার ছেলে এখান থেকে মোবাইল ও ফ্যান চুরি করেছে বলে যানায়। আমরা তাকে শিকলে বেধে রেখেছি যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের মোবাইল ও ফ্যান বা এগুলোর জন্য ৪৫ হাজার টাকা না দিলে আমরা তাকে তিলে তিলে মারবো।
রাসেলের মা রাশেদা টাকা যোগাড় করার জন্য নিরুপায় হয়ে দ্রুত দৌড়ে যান নিজের বাসায় ( রাসেলের মা রাশেদা একজন কাজের বুয়া বা গৃহ কর্মী) বাসায় গিয়ে দেখে ঘরে টাকা নেই।
তখন সে, যে বাসাগুলোতে গৃহ কর্মীর কাজ করে তাদের কাছথেকে ২ হাজার কারো কাছথেকে ৩ হাজার টাকা করে ধার নেয় এবং পরবর্তীতে সব টাকা একত্রিত করলে মাত্র ৩৩ হাজার টাকা হয় সেই টাকা গত ২৭ অক্টোবর’২৪ দুপুর ১২ টায় আসামী গোলাম কিবরিয়া (২৪) আনোয়ার হোসেন (২৮) নূর আলী (১৯) ও সবুজ কে এনে দিলে আসামীরা রাশেদা বেগমের নিকট হইতে সাদা কাগজে একটি লিখিত নিয়া রাসেল কে ফেরৎ দেয়। কিন্তু সুজন এর লোকজন না থাকায় তাকে বেধে রাখে। পরবর্তীতে রাশেদা বেগম বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ তাৎক্ষনিক উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৯ নং সেক্টরস্থ ৬/এ নং রোডের নাভানা সিএনজি রোডের ভাই ভাই অটোমোবাইল ওয়ার্কসপের ভিতরের ইপেইন্টিং রুম হইতে উপরে উল্লেখিত ১ ও ২ নং আসামীদেরকে আটক করে এবং তাদের হেফাজত হইতে সুজনকে
উদ্ধার করে।
পুলিশ রাশেদা বেগম ও উপস্থিত লোকজনের উপস্থিতিতে উক্ত আসামীদেরকে চাঁদা বাবদ গ্রহণ করা টাকা নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে আসামীরা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এবং উক্ত ১ নং আসামী তার সাথে থাকা নগদ ৩২,০০০/- টাকা বাহির করিয়া দিলে পুলিশ হেফাজতে নেয় এবং ঘটনাস্থল হতে রাসেল ও সুজনকে বেধে রাখার লোহার শিকল ও সাদা কাগজে লিখিত ও স্বাক্ষর যুক্ত কাগজটি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।
উক্ত বিষয় নিয়ে রাসেল ও তার বন্ধু সুজনের নিকট হতে আরো জানা যায়, যখন তাদেরকে আসামীদের গ্যারেজে শিকল দিয়ে বাধিয়া মারধর করছিল তখন আমরা তাদের নিকট ৪ নং আসামী
সবুজ নিজেকে পুলিশ অফিসার বলে দাবী করেছিল বলে যানায়।
উক্ত বিষয় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়েছে মামলা নং ৪৮।
উক্ত বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মাদ হাফিজুর রহমান বলেন, চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে রাসেলের মায়ের কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা তারা চাঁদ নেয় এবং রাসেলকে ছেড়ে দেয়, সুজনের বাবা মা না থাকায় তাকে তারা আটকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে উত্তরা পশ্চিম থানা টিম ঘটনাস্থল থেকে সুজনকে উদ্ধার করে এবং শিকলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করে সুজনকে হসপিটালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি,
এই ঘটনায় যারা জড়িত যারা পাশবিক নির্যাতন করেছে মধ্যযুগের মতো, তাদের আমরা আটক করি এবং এদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
Leave a Reply