দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা)। সংগঠনটির দাবি, অবৈধভাবে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও ব্যক্তিকে আইনের আওতায় বাইরে রাখার স্বার্থে দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।
৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও বৈষম্য দূর করতে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নাজমুচ্ছায়াদাত ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদ কালামের স্বাক্ষরে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। শরীফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহালসহ ডুসার ছয় দফা দাবির বিষয়ে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, শরীফের বিষয়টি আদালত দেখছে। সেটি কমিশনের এখতিয়ারে নেই। তবে বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
ডুসার পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ‘২০ক ধারা’য় উল্লিখিত তদন্তের সময়সীমা লঙ্ঘনের দায়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত সব প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ায় প্রেষণে নিয়োজিত ‘অভিজ্ঞতাহীন নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তাদের’ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে মাতৃসংস্থায় পাঠাতে বলেছে সংগঠনটি।
এ ছাড়া ডুসার পক্ষ থেকে বৈষম্যমূলক ও বিধিবর্হিভূতভাবে কমিশনের যোগ্য পদোন্নতিবঞ্চিত সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি ও পদায়ন করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে দুদকের মহাপরিচালক, পরিচালক পদ আপগ্রেড করাসহ বেতন কাঠামোর সব ধাপে পদক্রম সৃজন করে যুগোপযোগী অর্গানোগ্রাম তৈরি ও পাসের দাবি জানিয়েছে ডুসা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতিবাজদের চক্ষুশূল হয়েছেন। দুদকে কর্মরত থাকা অবস্থায় দুর্নীতি ধরে দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যখাতকে পরিশীলিত করেছেন। কর্ণফুলী গ্যাস সেক্টরে দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়ে রোষানলে পড়েছেন বেশ কয়েকবার। যারা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ওই কাজটি শক্তভাবে আঞ্জাম দিয়ে বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। ওই সময় তিনি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীতে উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন করেন দুদকে কর্মরত মধ্যম ও নিম্নপদস্থ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। মানববন্ধ শেষে দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপিও জমা দেন ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্মারকলিপিতে দুদকের কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা-২০০৮ এর বিতর্কিত ৫৪ (২) ধারা বাতিল করার দাবিও জানান তারা।
Leave a Reply