* মাতারবাড়ির জনসভাস্থল পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ
* মহেশখালী শুধু বাংলাদেশ নয়, বর্হিবিশ্বে উচ্চপর্যায়ে পৌঁছেছে : হানিফ এমপি
* জনসভায় বিএনপি-জামায়াতকে আমন্ত্রণের নির্দেশ দিলেন হুইপ স্বপন
কক্সবাজার জেলা সহ সোনা দিয়া দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীজুড়ে ব্যাপক উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের বীজ রোপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১১ নভেম্বর রাস্ট্র নায়ক, প্রধানমন্ত্রী ঝিনুকের আদলে সাজানো আইকনিক কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন পরবর্তী নিজ হাতে গড়া উন্নয়ন দেখতে তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি টুঙ্গিপাড়া খ্যাত মাতারবাড়ি সফর করবেন। সফরকালে তিনি ঘুরে ফিরে দেখবেন মাতারবাড়ির উন্নয়নযজ্ঞ। এরপর তিনি মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান
অতিথির ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়ির জনসভাকে রেকর্ড হিসেবে দেখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এতে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেনে, তাঁর জনসভায় দুই লক্ষ জনতার সমাগমের উপস্থিতি ঘটবে। নিজের ইচ্ছেতে নির্ধারিত হয়েছে ভেন্যু। তাঁর জন্য সব ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি নিজেই।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমণকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপির নেতৃত্বে বুধবার (০১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জনসভার জন্য নির্ধারিত কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন ‘মাতারবাড়ি টাউনশীপ’ এলাকা পরিদর্শন করেন উচ্চ পর্যায়ের টিম । এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় যোগদান করেন নেতৃবৃন্দ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ির প্রতি ভালোবাসার বর্হিঃপ্রকাশ করেছে। আমরা সেই লক্ষ্যে এখানে এসেছি। তবে তিনি এমন একটা সময়ে আসবেন, যখন বাংলাদেশের সকল মানুষ নির্বাচনমুখি। এই জনসভায় দুই লাখ মানুষের উপস্থিতির আশা প্রকাশ করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা মাতারবাড়ি জনসভাকে রেকর্ড হিসেবে দেখতে চাই। তাই আগামী পাঁচ তারিখের পর থেকে নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করুন। এজন্য প্রত্যেক ইউনিয়নের কর্মি সভা শুরু করুন। মানুষকে বুঝাবেন, প্রধানমন্ত্রী মহেশখালীকে শুধু বাংলাদেশ নয়, বহিঃবিশ্বে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে গেছেন। জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিনতি করে প্রমাণ করতে হবে এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে।
হানিফ বলেন, ‘সংবিধান মেনে আগামী ১৫-১৬ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তবে বিএনপি ও সুশীল সমাজের লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচান বানচাল করা। কারণ, তারা জানে নির্বাচন হলে জনগণের আস্থা শেখ হাসিনার প্রতি।’
বিএনপির সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘আজকে যখন ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছে বিএনপি আজ পযন্ত একটা বিবৃতি দেয়নি। ফিলিস্তিনদের হত্যা করছে ইহুদি ইসরায়েল আর তাদের বন্ধু আমেরিকা। এখন বিএনপির প্রভুও আমেরিকা।’
মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার পাশা চৌধুরীর সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওসমান শরীফের সঞ্চালনায় প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি।
স্বপন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়িকে এতো ভালবাসেন আমি জানতাম না। গত কয়েকদিন ধরে জনসভা কোথায় হবে এটি দ্বিধা তৈরী হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ‘আমি মাতারবাড়িতে’ই জনসভা করব। তাঁকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও টলাতে পারেননি। তাই জনসভা সফল করতে আশেপাশের তিন ইউনিয়নসহ মহেশখালী উপজেলা, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি আশা করছি।’
স্বপন বলেন, ‘পাঁচ লক্ষ দাওয়াত পাত্র ছাপাবেন। খাম বানাবেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াত বিবেচনা করবেন না। সবাইকে দাওয়াত দেবেন। প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় সবাই আমন্ত্রিত।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘১৯৯৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়িতে জনসভায় ভাষন দেন। সেই জনসভায় টুঙ্গিপাড়া নাম দেন, বলেন, ‘এটা মাতারবাড়ি নয়, এটা আমার দ্বিতীয় বাড়ি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমার সযত্নে গড়া মাতারবাড়িতে জনসভার আয়োজন কর, সেখানেই যাব। আমি জানি, আমি যাব বললে, মহেশখালীর মানুষ ছুটে আসবে। দুই লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে।’
প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য, আলহাজ্ব জাফর আলম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জি.এম ছমি উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু হায়দার।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সাবেক সদস্য এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, জিএম কাশেম, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক মো. তাহের, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল করিম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানসহ জেলা, উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply