চাঁদপুর থেকে নদীভাঙা মৃত আক্তার জামান এর ৫ ছেলে ৪ মেয়ে সন্তানের মধ্যে মোঃ বাদশা মিয়া যাহার জাতীয় পরিচয় পত্র নং ৬৭২৫৮০৯০৩৪১২২ ও মোঃ হোসাইন বাবুল ওরফে পান বাবুল জীবিকার জন্য কাজের সন্ধানে যুবক বয়সে নারায়ণগঞ্জ নিতাইগঞ্জ আশ্রয় নেয়। শুরুতে জীবিকার জন্য ছালা সেলাইয়ের কাজ ও চা পানের দোকান দিয়ে কর্ম শুরু করলেও পরবর্তীতে অবৈধ ভাবে চোরাই গমের ব্যবসা করে কোটি পতি বনে যান। গড়ে তোলেন নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি বাড়ি । ছালা সেলাইকরা বাদশা গড়ে তোলেন মেসার্স দারুস সুন্নাত ফ্লাওয়ার মিলস্ ও চা পান দোকানদার বাবুল মেসার্স বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার মিলস্। অর্থের মালিক হয়ে সম্পর্ক তৈরি করতে থাকেন সমাজের প্রভাবশালী মহলের সাথে। সম্পর্কে গড়া প্রভাবশালীদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে করতে থাকে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ । কয়েকটি চেক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাদশা পুলিশ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গাঁঢাকা দিয়ে রয়েছে আর তার গাঁঢাকার কাজে কাজে সহযোগিতা করছেন তার ছোট ভাই পান বাবুল। দু ভাইয়ের প্রতি এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে।
সূত্রে জানা যায় যে নারায়নগঞ্জ ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকার নাসিরের বড় ভায়রাভাই বাদশা। বাদশার ছোট ভাই বাবুল এ আত্মীয়তার সুবাধে নাসিরের সাথে বাবুলের পারিবারিক ভাবে বিয়াই সম্পর্ক। নাসিরকে ভায়রাভাই বাদশার ফ্লাওয়ার মিলস্ এ অংশিদারে ব্যবসার প্রস্তাব দেয় বাবুল। নাসিরের হাতে নগদ টাকা না থাকায় নাসির তার বড় ভাই আব্দুল ছালামের সাথে আলোচনা করলে আব্দুল ছালামের হাতে নগদ অর্থ নেই বলেলে নাসির এ কথা বাবুলকে বলে। চতুর বাবুল কৌশলে সমস্যানেই নেই বলে প্রস্তাব দেয় নগদ অর্থের পরিবর্তে এক কাজ করলেই হবে। আব্দুল ছালামের যে ৫ শতাংশ বাড়ি রয়েছে তা ব্যাংকে মর্গেজ দিয়ে টাকা তুলে অংশিদারের ব্যবস্হা করে দিবে। সহজ সরল নাসির বাদশা ও বাবুলের কথার কোন মারপ্যাচ বুজতে না পেরে ভাইয়ের সাথে কথা বলে। ছোট ভাইয়ের উন্নতির জন্য নাসিরের কথায় বড় ভাই আব্দুল ছালাম প্রস্তাবে রাজি হয় এবং বাদশার সাথে আব্দুল ছালামের ১৭-০৭-২০১৬ সালে একটি অংশিদারের ব্যবসায়িক চুক্তি হয়।
৩০% অংশিদারিত্বের কথা বলে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করবে বলে বাবুল ও বাদশার সাথে আলোচনা করে ব্রাক ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের কাগজের জটিলতা দেখিয়ে চতুর স্বার্থবাজ প্রতারক বাদশা ও বাবুল নাসিরকে বলে আব্দুল ছালামের জমিটি সাফ কবলা করেদিলে লোননিতে সুবিধা হবে। তাদের কথা সরলমনে বিশ্বাস করে আব্দুল ছালাম ফতুল্লা থানার তল্লা মৌজায় তার ক্রয়কৃত ৫ শতাংশ জমির ৪২৭২ নং দলিলটি বাদশা বরাবরে ১৬-০৪-২০১৪ তারিখে ৪০১০ দলিল মূলে সাফকবলা দলিল করে দেন। সেই জমি নিয়ে বাদশা ব্যাংক থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ব্যাবসা বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে বাকি টাকা বাদশা ও বাবুল নিজেদের কাছে রেখে দেয়। ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বাদশা বাড়িটি ০৬-০১-২০১৬ তারিখে ১৮৯ দলিল মূলে মোঃ আরিফ হোসেনের নিকট বিক্রি করে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করলেও নাসিরের ভাই আব্দুল ছালামকে বাড়ি বিক্রির কোন টাকা না দিয়ে বাদশা ৬৫ লক্ষ টাকার একটি চেক আব্দুল ছালামকে দেন।
অপরদিকে নাসিরের ভাই আব্দুল ছালামকে ৩০ লক্ষ টাকায় ৩০% ব্যবসার অংশিদার করলেও বিনিয়োগের লভ্যাংশ বুঝিয়ে না দিয়ে নাসিরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে ভয় ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক বের করে দেয়। নাসির তাদের প্রতারনা দেখে চিন্তায় পড়ে যায়। এখন সে কিভাবে ভাই আব্দুল ছালামের টাকা তাদের হতে ফেরত পাবে সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে নাসির নিরুপায় হয়ে ব্যবসায়ী সমিতির কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে আবেদন করলে সমিতির সিদ্ধান্ত মতে ২০ লক্ষ টাকা হতে বাদশা ৪ লক্ষ টাকা নগদ দিয়ে বাকী ১৬ লক্ষ টাকার চেক আব্দুল ছালামকে দেন।
কিন্তু বর্তমানে নাসিরের ভাই মোট ৮১ লক্ষ টাকার ৬ টি চেক পেলেও চেকের কোন টাকা না পেয়ে ভিভিন্ন জনের দারে দারে ঘুরে কোন সমাধান না পেয়ে নাসিরের ভাই আব্দুল ছালাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা গুলো হলো মোকাম বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত -১,নারয়নগঞ্জ, সি,আর, মামলা নং-১১৭৭/২০২২, মোকাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত -(ক) অঞ্চল , সি,আর, মামলা নং-২১৭৯/২০১৯,মোকাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত (খ), সি,আর, মামলা নং-১১৭১/২০১৮, মোকাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত (ক),অঞ্চল , সি,আর, মামলা নং-১১৭২/২০১৮,মোকাম নারায়নগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত (খ), সি,আর, মামলা নং-১১৭১/২০১৮,মোকাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত (ক) অঞ্চল , সি,আর, মামলা নং-৫৭৮/২০১৯।
উক্ত মামলায় মহামান্য আদালত রায় ঘোষণায় চেকের সমপরিমাণ টাকা ফেরৎ সহ জেল জরিমানা ধার্য করেন । এ রায় ঘোষণার পরহতে বাদশা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে আত্নগোপন করে রয়েছে এবং বাদশার এই আত্নগোপনে সহযোগিতা করে আসছে ছোট ভাই বাবুল এমনটাই অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী নাসির । ভূক্তভোগী পরিবারের দাবী অতিসত্বর বাবুলকে আইনের হেফাজতে এনে জিজ্ঞেসাবাদ করলেই বাদশার সন্ধান মিলবে বলে বলে দাবি জানান । বাদশার ছোট ভাই বাবুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ১৬ লক্ষ টাকার বিষয়ে জানি এবং এ নিয়ে মামলা হলেও পারিবারিক ভাবে এটা সমাধানের জন্য বসেছিলো তবে ৬৫ লক্ষ টাকার চেকের বিষয়ে আমার জানা নেই। আর আমার ভাই বাদশার সাথে আমার গত ২ বছর যাবৎ কোন যোগাযোগ নেই।
Leave a Reply