চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে ফোন করা হয়। এরপর ভুক্তভোগীকে জানানো হয় তার নামে একটি লাগেজ এসেছে। যাতে রয়েছে অনেক ডলার। আর এসব ডলার ছাড়াতে হলে টাকার প্রয়োজন। আর এভাবেই প্রতারণার ফাঁদে পড়েন ঐ ভুক্তভোগী। বিভিন্নভাবে তার কাছ থেকে প্রায় ৭৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। রাজধানীর মতিঝিল থেকে চক্রের অন্যতম সদস্য মোঃ সোহাগ শেখকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩৫টি ব্যাংকের ৮৬টি ডেবিট কার্ড, ১৫১টি ব্যাংকের চেকের পাতা, ৪টি মোবাইল ও ৮টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। মহানগর পুলিশ জানায় গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ শেখ শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের মোঃ জব্বার শেখের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার খিলগাঁও থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ৭ জুলাই রবিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা জানান ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি চাকরিজীবী রত্নেশ্বর মাঝির (৬৫) মোবাইলে ফোন আসে। যিনি ফোন দিয়েছিলেন তিনি নিজেকে খায়রুন নেছা পরিচয় দেন। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন কাস্টমস অফিসার পরিচয় দেন। এ সময় রত্নেশ্বর মাঝিকে তিনি বলেন তার নামে ‘এলিজাবেথ এরিস’ নামের একজন লাগেজ পাঠিয়েছেন। যাতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ ডলার। এসব ডলার কাস্টমস থেকে ছাড়ানোর জন্য টাকা লাগবে। পরবর্তীতে এশিয়া, পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংকের একাউন্টে এবং বিভিন্ন বিকাশ নম্বর থেকে মোট ৭৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা প্রেরণ করেন রত্নেশ্বর মাঝি। এরপরও লাগেজ ছাড়াতে আরো টাকা লাগবে জানালে তিনি বুঝতে পারেন যে, প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। এ ঘটনার পর ২৫ ডিসেম্বর বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। উপ-পুলিশ কমিশনার আরো জানান ৪ জুলাই কোতয়ালী মডেল থানার একটি টিম ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার টিম তদন্ত করে মতিঝিল থেকে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্য সোহাগ শেখকে গ্রেপ্তার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তিনি সংঘবদ্ধ ডলার প্রতারণা চক্রের সদস্য। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী) নাফিছুর রহমান, (স্টাফ অফিসার ও সহকারী পুলিশ কমিশনার) প্রণয় রায়, কোতয়ালী থানার ওসি (অপারেশন) বিপ্লব মিস্ত্রী, এসআই রেজা সহ আরো অনেকে।
Leave a Reply