পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, বাজারজাতকরণ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এছারা গত পহেলা এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আইন যেন হাতে কলমেই সীমাবদ্ধ। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে আছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর পদ্মানদীতে কাঞ্চনপুর, বাল্লা, লেছড়াগঞ্জের হরিণাঘাট, ধুলশুরার হাতিঘাটা, আন্ধারমানিক পদ্মানদীর মাঝে এবং জেগে ওঠা নতুন চরের আশপাশেই জেলেরা নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও মশারী জালের ব্যাড় দিয়ে জাটকা, রুপালি ইলিশের পোনা আহরণ করছে নির্বিঘ্নে। আর এসব পোনা প্রতিদিন ভোরবেলা আন্ধারমানিক খেয়াঘাটসহ বিভিন্ন আড়তে ডাকে আর প্রকাশ্যেই ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।
রবিবার (৯ এপ্রি)ল আন্ধারমানিক বাজার থেকে ইলিশের পোনা ক্রয় করে নিয়ে যাওয়ার সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দড়িকান্দি গ্রামের একজন জানান, ১০০ টাকা দিয়ে একভাগ ইলিশের পোনা কিনলাম। দাম কম আর খেতেও অনেক সুস্বাদু।
আন্ধারমানিক বাজারে ইলিশের পোনা বিক্রয় করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, পদ্মানদী থেকে জেলেরা এই ইলিশের পোনা মারে, সকালে আন্ধারমানিক আড়তে এসে ডাকে বিক্রি করে, আমরা তা কিনেছি, এখন বাজারে বিক্রি করছি। আমাদের কি দোষ। যাদের দেখার, তারা তো দেখে না। ইলিশের পোনা বিক্রয়ের ছবি তোলা দেখে তড়িঘড়ি করেই লুকিয়ে ফেলে পোনাগুলো, নিউজ প্রকাশ না করার জন্য ম্যানেজ করার করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এই মাছ ব্যবসায়ী।
সামাজিক সংগঠন হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গের সাধারণ সম্পাদক প্রণব পাল জানান, আমি মাঝে মাঝে আন্ধারমানিক আড়তে যাই মাছ কিনতে, জাটকার পোনা তো আছেই, এছারা বিভিন্ন ধরণের ছোট ছোট পোনা মাছ ক্রয় বিক্রয় করা হয় এই আড়তে, দেখেছি। এগুলোর বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহন না করলে সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যাবে এবং মৎস্য সম্পদ বিলুপ্তির আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের সচেতনতা জরুরী, হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গের উদ্যোগে সচেতনতার জন্য সকল পদক্ষেপ নেয়া হবেও বলে জানান তিনি।
প্রকাশ্যে রুপালি ইলিশের পোনা নিধন, বিক্রয় হচ্ছে বাজারে মর্মে বক্তব্য চাওয়ায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, আমি এখনই ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলে দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফরমান আলী বলেন, আমি মাত্রই আন্ধামানিক বাজারের পোনা মাছ বিক্রিয়ের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। যারা পোনা মাছ ধরছে এবং বিক্রয় করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য যে, গত কয়েকদিনে হরিরামপুরে প্রকাশ্যে জাটকা ক্রয়-বিক্রয়ের নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা প্রশাসন। এতে লক্ষাধিক টাকার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, চায়না দোয়ারী ধ্বংস করার হয়। তারপরও থামছে না পদ্মানদী থেকে জাটকা আহরণ ও প্রকাশ্যে ক্রয়-বিক্রয়।
Leave a Reply