রমজান মাস মুসলমানদের জন্য খুবই উত্তম ও সিয়াম সাধনার মাস। এ বছর চৈত্র মাস থেকে রোজা শুরু হওয়ার ফলে অনেকটা রোদের তাপদাহের মধ্যেই মুসলমানরা সিয়াম পালন করছেন। আর এরই মধ্যে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন নেত্রকোনাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় শুরু হয়েছে বিদ্যুতের অসহনীয় ভেলকি বাজী লোডশেডিং। বেশিরভাগ সময় সেহরী, ইফতার ও তারাবীহ নামাজের সময় লোডশেডিং হচ্ছে। ক্রমাগত এই লোডশেডিংয়ে চরম তাপদাহের মধ্যে অসহনীয় গরম সহ্য করে মহান রবের উপাসনা করতে হচ্ছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩-৪ ঘন্টাও ঠিক মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছে না এই এলাকার মানুষ যার ফলে সাধারণ মুসল্লী সহ ব্যবসায়ী,কৃষক ও শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রমযান মাসের শুরু থেকেই নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং-এ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। লাগাতার লোডশেডিং এর ফলে চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-কার্যক্রম। শুধু তাই নয় এই চরমমাত্রার লোডশেডিং এর কারনে কৃষকরা জমি তে পানি সেচ দিতে পারছে না ফলে পুড়ছে যাচ্ছে শত শত হেক্টর জমির ফসল।
ব্যবসায়ীরা জানান, লাগাতার লোডশেডিং এর ফলে প্রচন্ড এই গরমের মধ্যে সারাদিন রোজা রেখে ব্যবসা বানিজ্য করা খুব ই কষ্টকর। রোজার দিনে এমনিতেই ব্যবসা খুব একটা ভালো না, তার উপর লাগাতার লোডশেডিং-এ আমারা চরম ভোগান্তিতে আছি।
এদিকে গত একমাস আগে নেত্রকোনা সদরের রৌহা ইউনিয়ন এবং পুর্বধলার খলিশাপুর ইউনিয়নে প্রচুর পরিমানে শিলাবৃষ্টির কারনে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আর সেই ধাক্কা সামলানোর আগেই এখন শুরু হয়েছে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যাপক লোডশেডিং।
“আমাদের বোরো- ২৮ ধান আরো আগেই নষ্ট হয়ে গেছে শিলাবৃষ্টি ও গোড়া পচা রোগের কারনে। এখন যে গুলো আছে সেগুলো ও পানি সেচের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যা আমাদের জন্য দুর্ভিক্ষের আগাম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সারাদিনে ৩-৪ ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকছেনা, এতদিন কষ্ট করে ফসল ফলানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু সেই কষ্টের ফসল পানির অভাবে নষ্ট হয়ে গেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। আমাদের কে এখন না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের ফসল রক্ষার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
বিদ্যুৎ অফিসের নোটিশ বিহীন লাগাতার লোডশেডিং-এ অতীষ্ট নেত্রকোনার সাধারণ জনগন, মুসল্লী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এরই মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনতিবিলম্বে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে এমনটাই আশাবাদী এলাকার সাধারণ জনগন।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে অফিসের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি কয়েক বার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি
Leave a Reply