রুহুল আমিন, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে পথচরীদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করেছেন আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট।
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ এবং ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করতে পথচারী ও দুঃস্থ-অসহায় মানুষের মাঝে ১লা রমজান থেকেই ইফতারের আয়োজন করেছেন আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) ইফতারের আগ মূহুর্তে উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের নিজেদের অর্থায়নে তৈরি পূর্ব সাচাইল জামে মসজিদে দেখা যায়, মসজিদের সামনে সামিয়ানা টানিয়ে মনোরম পরিবেশে বিভিন্ন আইটেম সাজিয়ে পথচারীদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করে রেখেছে আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট। প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে শুরু হয় স্বেচ্ছাসেবকদের রান্নার আয়োজন। চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এরপর গরম গরম খাবার হাজির করা হয় মসজিদে। তবে তার আগ থেকেই এখানে জড়ো হতে থাকে রিক্সাচালক, ভিক্ষুক, অসহায় মানুষ ও ভ্রাম্যমাণ রোজাদাররা। তাদের কিছু স্বেচ্ছাসেবক প্রতিদিনের বাজার, রান্না থেকে শুরু করে যাবতীয় সকল কাজ সম্পন্ন করে থাকে। খেঁজুর ও শরবতের মাধ্যমে রোজা ভাঙ্গার পর পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন রকমের খাবার। তৃপ্তি সহকারে নিন্ম আয়ের অনেক মানুষ এখানে পেটভরে ইফতার করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক পাশে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সাজিয়ে রাখা আছে ইফতারির প্লেট। প্লেটে রাখা আছে তরমুজ, ছোলা, মুড়ি, খেজুর, জিলাপি। তবে ইফতারের মেন্যুর পরিবর্তন হয়। কখনো দেওয়া হয় বিরিয়ানি বা নানা রকম ফল। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অতিথিদের ভিড়। গেটে দাঁড়ানো একজন স্বেচ্ছাসেবক নির্দেশনা দিয়ে তাদের বসিয়ে দেন লাইন করে। এর পরই শুরু হয় ইফতারির প্লেট বিতরণ।
ইফতারে অংশগ্রহণকারী একাধিক রোজাদারদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এহন জিনিসের যে দাম। কেমনে চলুম। ইফতার না হয় হইল এহানে কিন্তু শেষ রাইতে কী খামু জানি না। তয় আল্লাহ তাগো ভালা করুক যারা আমাদের ইফতার করাচ্ছে। আরেকজন রোজাদার বলেন, প্রথম রমজানে এইহানে ইফতার করছি, তাই আইজকাও আইছি। তাগো ইফতার খুব ভালা। আল্লাহ তাগো ভালো করুক।
কথা হলে স্বেচ্ছাসেবকগণ বলেন, আমাদের কাছে ইফতার করতে আসেন, তাঁরা মূলত ছিন্নমূল এবং খুব নিম্ন আয়ের মানুষ। আমরা খুব যত্নের সাথে তাদের ইফতার পরিবেশন করি।
পথচারীদের জন্য ইফতারের এ আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাষ্টের সদস্য সচিব সামির হোসেন সাকী মাহাজন জানান, মানবিক কারনে আমরা ভ্রাম্যমাণ রোজদার, পথচারী ও গরীব মানুষদের মাঝে ইফতারি করানোর ব্যবস্থা করেছি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মানুষের মাঝে ভেদাভেদ কমানোর জন্যই আমাদের এ আয়োজন। তিনি আরও বলেন, পুরো একটা মাস আমাদের রোজদার ভাইয়েরা এখানে ইফতারিতে শরীক হবেন।
আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাষ্টের পরিচালক সারওয়ার হোসেন লিটন মহাজন জানান, আমাদের পারিবারের সকলকে নিয়ে গঠিত আকতার আছেফা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এলাকার অসহায় ও দুস্থ্যদের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার অসহায় এবং পথচারীদের মাঝে সারা মাসব্যাপী ইফতারের ব্যাবস্থ্যা করা হয়েছ।তাছাড়া রোজা পরবর্তী অসহায় মানুষদের জন্য আমরা সাধ্যমত ঈদ সামগ্রী ও নতুন কাপড়ের ব্যাবস্থ্যা করে থাকি।
Leave a Reply