এবারের ঈদের বাজারে পন্যের গায়ে আগুন, অসহায় হয়ে পরেছে ক্রেতাগন । ধনী-গরিব সবাই চায়, সাধ ও সাধ্য মতো নতুন পোশাক কিনে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে। কিন্তু এবার সেই আনন্দও মাটি হয়ে যেতে বসেছে অনেকের। নিত্যপণ্যের বাজার বৃদ্ধির কারণে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন মার্কেট গুলোতে ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের ‘পকেট কাটা’র অভিযোগ উঠেছে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে।
ব্যবসায়ীদের দাবি বঙ্গবাজারে আগুন এবং করোনাকাল ও সরকারের বিধি নিষেধের কারণে ৩ বছর ব্যবসা করতে না পারা, এবং এর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ব্যবসায় দেখা দিয়েছে । তাই ঈদে পোশাকের শতকরা ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ দাম বেড়ে গেছে। কুষ্টিয়ার শহর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের চাহিদা মূলত গজ কাপড়, থ্রিপিস ও পাঞ্জাবিতে। এই তিনটির পাশাপাশি শাড়ি ও লেহেঙ্গা, গাউনসহ অন্যান্য পোশাকও বিক্রি হচ্ছে। দোকানগুলোও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সারিসারিভাবে সাজিয়ে রেখেছে দেশি-বিদেশি পণ্যগুলো। ক্রেতা দেখলেই হাঁকডাক দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নানা কথা ও অফার দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্টের চেষ্টা করছেন তারা। ক্রেতারদের অভিযোগ পোশাক পছন্দ হলেই ইচ্ছামতো দাম হাকাচ্ছেন দোকানীরা। মার্কেটে আসা ক্রেতারা বলছেন, ঈদে পোশাকে শতকরা ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে একদিকে ডলারের দাম বেড়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় ডলার প্রতি ২০- ২৫ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ উৎপাদন খরচ বেড়েছে, পাশাপাশি দোকান ও কর্মচারী ভাড়াসহ খরচের পর মুনাফা আসবে। সব কিছু হিসাব করে এবার বেশি দামে পোশাক বিক্রি করতে হচ্ছে।
কুষ্টিয়া শহরে এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, গত বছর ভালো ব্যবসা হয়নি। এখন টুকটাক বেচা কেনা হচ্ছে। আশা করছি- আগামী কয়েকদিন থেকে বিক্রি বাড়বে। তিনি আরো জানান, এক গজ কাপড়ের মূল্য গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। গত বছর যে এক গজ কাপড় বিক্রি করেছি ৫৫ টাকা এবার সেই কাপড় বিক্রি করছি ৮৫ টাকায়। কুষ্টিয়া এন, এস, রোডের এক কাপড় ব্যবসায়ী মোঃ আমানুল্লাহ বলেন, করোনা ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে গত ৩ বছর আমাদের লোকসান গুণতে হয়েছে। গত বছর কিছুটা মুনাফার দেখা পেয়েছিলাম। আশা করছি, এবার ভালো ব্যবসা করতে পারব।
সাইফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হবে। আমি একটা মধ্যপত্ত ফ্যামিলির ছেলে, পোশাকের এত পরিমাণ দাম ধরছে বিক্রেতারা যার কারণে ফ্যামিলির সবার জন্য পোশাক কেনা আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠছে না।
কুদরত খান নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, বিক্রেতারা বাজারটাকে আগুন বানিয়ে দিয়েছে। পোশাক কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের অল্প পরিমাণ আয়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে পরিমাণ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ, পোশাক তো দূরের কথা।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়র সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল, বলেন আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। কোন বিক্রেতা যদি নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পাই, আমরা তদন্ত করে প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
Leave a Reply