রাজধানীর উত্তরার বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল গুলোতে দিন দুপুরেই রাস্তার ফুটপাত ওভারব্রিজের চারপাশে ভিজিটিং কার্ড ফেলে দিয়ে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড। সব কিছু জানার পরেও নিরব ভুমিকায় থানা পুলিশ।মাঝেমধ্যে অভিযান হলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারো গজিয়ে ওঠে এসব আবাসিক হোটেল।
সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে উত্তরার আবদুল্লাপুর,হাউজ বিল্ডিং সহ এলাকায় বেশ কিছু আবাসিক হোটেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু এসব আবাসিক হোটেল গুলো বন্ধের বিষয়ে থানা পুলিশকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে কয়েকটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালালেও কিছুদিন পর পুনরায় চালু হয় এসব আবাসিক হোটেল গুলো। সাধারণ মানুষজন বলছেন পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ না থাকাই এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে।
উত্তরা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরার বিভিন্ন সেক্টর গুলোতে গোপনে চলে আসছিল এই ব্যবসা। সরকার পতনের পর পরই প্রকাশ্যেই চলছে দেহ ব্যাবসা সহ নানা অসামাজিক কার্যকালাপ । এসব কর্মকান্ড অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’ বলেই চলছে। প্রশাসন বলছে অনেক তথ্যই নেই তাদের কাছে। তবে অনুসন্ধান মিলেছে উত্তরার হাতে গোনা কয়েকটি আবাসিক হোটেল বাদে প্রায় সবগুলি হোটেলেই বেশির ভাগ অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে প্রশাসনের নাকের ডগাতেই।
পথচারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন মহাসড়কের চারপাশেই বিভিন্ন ধরনের রংবেরঙের ভিজিটিং কার্ড ফেলে রাখে কিছু দালাল,এসব কার্ড দেখে উঠতি বয়সের স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা এসব অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়।
কলেজ শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, প্রায় সময় সকাল বেলা কিছু দালাল রাস্তার পাশে এবং ওভারব্রিজে ভিজিটিং কার্ড ফেলে রাখে, এসব যেন দেখার কেউ নাই।
কয়েকটি ভিজিটিং কার্ডের নাম্বারে কল দিলে তারা জানান আমাদের এখানে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে,স্কুল কলেজের ১৫ থেকে ২০ জন মেয়ে রয়েছে,আপনি আপনার পছন্দমত মেয়ে নিয়ে সময় কাটাতে পারবেন।শুধু আপনারা আইডি কার্ডের ছবি নিয়ে আসবেন, আপনাদের কোন ঝামেলা হবে না।
রাস্তায় ফেলে দেওয়া ভিজিটিং কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জজ কোর্টের এক আইনজীবী এডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, আসলে এ বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়, আমাদের ছেলে মেয়েদের সাথে নিয়ে রাস্তায় হেঁটে চললে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়, বিষয়টি প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।
অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বলেন, রাস্তায় বের হলেই দেখা যায়, রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং ফ্লাইওভারের নিচে ভিজিটিং কার্ড ফেলে রাখা হয়েছে, এসব দেখে উঠতি বয়সী ছাত্রছাত্রীরা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে।মাঝে মাঝে শোনা যায় অভিযান হয়েছে ,কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখা যায় আবারো গজিয়ে উঠেছে এসব অবৈধ হোটেল গুলো।
শুধু আবাসিক হোটেলই নয় এই দেহ ব্যবসা চলছে গোপনে উত্তরার বিভিন্ন ফ্ল্যাট বাসাতেও। উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কৌশলে চালাচ্ছে এই ব্যবসা। আবাসিক হোটেল গুলোতে একজন নারীর সাথে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা সময় কাটাতে খদ্দেরকে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। এরকম টা বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার, আছে আরো বিভিন্ন ক্যাটাগরি। হোটেল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক,হোটেল সোনালী,হেটেল সিটি, হোটেল প্রাইম ইন ,,হোটেল বেইজিং, হোটেল প্যালেস,হোটেল গ্রীন গার্ডেন, ওয়ান স্টার, রাজমনি, প্রাইম হোটেল,হোটেল নাইস লোক, রয়েল ব্লো, হেবেন আবাসিক, সিগাল,স্টার প্লাস,হোটেল সিংগাপুর।
কয়েকটি হোটেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় হোটেলে ১০/১২ জন মেয়ে দিয়ে তারা এই অনৈতিক কর্মকান্ড গুলো চালাচ্ছে আর এসব হোটেলে রাত কাটাতে হলেতো কথাই নেই,, গুনতে হয় কয়েক গুণ ভাড়া,বেশি অর্থ উপার্জনের লোভই হোটেল মালিকদের এই জঘন্য কাজে লিপ্ত করেছে।
উত্তরার বেশির ভাগ আবাসিক হোটেল গুলোর আয়ের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে নারীর দেহ ব্যবসা। এক বাক্যে হোটেলগুলোকে বলা যায় মিনি পতিতালয়। হোটেল কর্তৃপক্ষ অনেকেই হুংকার দিয়ে জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। জানা যায় , দেহ ব্যবসার জন্য প্রতিমাসে প্রশাসনের কিছু অসৎ সদস্যদের বড় অংকে উৎকোচ দিয়েই নির্বিঘ্নে চলে এই অনৈতিক কার্যকলাপ।
উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল গুলোতে তরুণ ও উঠতি বয়সের ছেলেদের আড্ডা ও আনাগোনা লক্ষ করা যায়। এই সব হোটেল গুলোতে কলগার্ল ও দেহ ব্যবসায়ী নারীদের অবস্থান থাকে। আর এই ব্যাবসার বিশেষ কৌশলে গড়ে ওঠে ইয়াবা ও মাদকের ব্যাবসা।
দিন দিন যুবসমাজ এই ফাঁদে পা দিয়ে অন্ধকার জগতে আসক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে এই সকল আবাসিক হোটেল গুলোতে প্রশাসন অভিযান চালালেও রাত পোহালে আবার সেই আগের চিত্রেরই দেখা মেলে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের সামনেই এইসব চললেও প্রশাসন কিছু করছে না। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দু’একটি অভিযান চালায়, উচ্ছেদ করার জন্য মূলত অভিযান চালায় না। সাধারণ সচেতন মানুষ এই ধরনের অপকর্ম থেকে উত্তরা,আবদুল্লাহপুর বাশীকে মুক্ত করতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
দ্বিতীয় পর্বে আরো বিস্তারিত থাকবে।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, আমি আসার পর থেকে উত্তরা এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে অভিযান চালিয়ে অনেক মাদক উদ্ধার করেছি তাদেরকে আইনের আওতায় এনেছি আর এই অভিযান চলমান থাকবে। আমরা খুব তাঁরা তারি এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব তিনি সাংবাদিকদের কে আহবান করেন আমাদের কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য।
Leave a Reply