আগামী বছর বাঘের নতুন সংখ্যা জানা যাবে বলে জানিয়েছেন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে। বুধবার সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বাঘ সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে না। ২০১৫ সালে আমরা ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘ জড়িপ করি, সেখানে আমরা ১০৬টি বাঘ পাই। পরে ২০১৮ সালে আমরা আবার ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপ করি। সেখানে ১১৪টি বাঘ পাই। বাঘের বৃদ্ধির হার প্রায় ৮ শতাংশ। গত অর্থবছর থেকে সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প সম্পন্ন জিওবি অর্থায়নে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তার মাধ্যমে ক্যামেরা ট্র্যাপিং শুরু করেছি। মিহির কুমার বলেন, সুন্দরবনের তিনটি জেলার মধ্যে এরইমধ্যে খুলনা এবং সাতক্ষীরা জেলায় ক্যামেরা ট্র্যাপিং শেষ করেছি। এবং চলতি অক্টোবর মাস থেকে বাগেরহাট জেলায় ক্যামেরা ট্র্যাপিং করা হবে। তিনটি জেলায় ক্যামেরা ট্র্যাপিং শেষ করার পর আমরা ডাটা এনালাইসিস করে আশা করছি আগামী বছর পূর্ণাঙ্গ বাঘের সংখ্যা জানাতে পারবো। তিনি জানান, একটা সময় সুন্দরবনে প্রচুর বাঘ মারা যেতো। আবার মানুষের আক্রমণে অনেক বাঘ মারা যেতো। সম্প্রতি সরকারের বেশকিছু পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি। বাঘ হত্যা এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন যে লোকাল মানুষ আছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট এই তিন জেলার স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমরা ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করেছি। তাদের কাজ হচ্ছে যখন বাঘ বন থেকে লোকালয়ে চলে আসে তারা দলবদ্ধ হয়ে বাঘকে আবার নিরাপদে সুস্থ অবস্থায় বনাঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। এখন বাঘের আক্রমণে যদি কেউ মারা যায় তখন তাকে আমরা তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করছি এবং তার প্রেক্ষিতে গত পাঁচ বছরে অর্থাৎ লোকালয়ে এসে কোনো বাঘ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও জানান, অনেক সময় যারা জীবিকার জন্য সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তখন কিছু ঘটনা ঘটেছে। এ সপ্তাহেও মোড়লগঞ্জে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। বছরে দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বনাঞ্চলে প্রবেশের ফলে। বাঘের আক্রমণে গত বছরে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে তিনজন মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব, মন্ত্রণালয় ও বন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply