একুশের চেতনার পথ ধরেই এসেছে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং এরই পথ ধরে একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এসেছে স্বাধীনতা। বাঙালির যত আন্দোলন, সংগ্রাম, ইতিহাস ঐতিহ্য তা সৃষ্টি হয়েছে সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়েই। বইমেলা সাংস্কৃতিক জাগরণে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছে। মেলায় আগত দর্শক সমাগম নিশ্চিতভাবেই প্রমাণ করে, সারা দেশের অগণিত গ্রন্থপিপাসুর নতুন বই হাতে পাওয়ার আনন্দ।
বইমেলায় আসেন লেখকরা, বিশেষত তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, ছাত্রছাত্রী আর মধ্যবিত্ত। জনপ্রিয় লেখকের বই ছাড়াও নবীন লেখকের প্রথম লেখাটিও ফেব্রুয়ারির বইমেলায় প্রকাশের অপেক্ষায় থাকে।
বইকেন্দ্রিক একটি সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণে বইমেলা যেন আরও বেশি অবদান রাখতে পারে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, লেখক, প্রকাশক সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে নতুন প্রজন্মের জন্য যুগোপযোগী বইমেলা যাতে করা যায়।
সৃজনশীল সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণে যা অত্যন্ত জরুরি। একুশের চেতনাসমৃদ্ধ মেলাকে কীভাবে আরও সম্প্রসারণ করা যায়, এর শ্রীবৃদ্ধি করা যায়, এ নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, সময়ের অভিঘাতে সবকিছু পাল্টাচ্ছে। মানুষের রুচি ও ‘মূল্যবোেধও পাল্টাচ্ছে। যে কারণে এর সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য বইমেলার চেতনা, উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনায়ও পরিবর্তন আনতে হবে। বইকেন্দ্রিক একটি সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণে বইমেলা যেন আরও বেশি অবদান রাখতে পারে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। বইমেলায় যত বই প্রকাশিত হয়, সে তুলনায় বিক্রি হয় না। বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় লেখক হুমায়ুন আজাদের কথায় ‘বই পড়া যায় না, নিজেকে পড়তে হয়, মনোযোগ দিতে হয়, বুঝতে হয়, জ্ঞান বা শিল্পকলার প্রতি আকর্ষণ থাকতে হয় এবং বই পড়ে হাতে হাতে নগদ আমরা কিছু পাই না। আমাদের পাঠ্যাভ্যাস বাড়ানোর পাশাপাশি বই কেনার অভ্যাসও করতে হবে। এবার পারিজাত প্রকাশনী থেকে নতুন বই এসেছে কানাডা প্রবাসি মেহের আফরোজ পান্না রচিত দুটি গ্রন্থ “জীবনের বাঁকে বাঁকে ” ও “সিদ্ধেশ্বরীগল্প”, বঙ্গীয় ব্যাবস্থাপক সভা১৯২১-১৯৩৬ অবিভক্ত বাংলার সমাজ ও রাজনীতি লেখক অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, অধরা ফাল্গুন লেখক জেবুননেসা, তুমি ভালো থেকো কবি মো. মেহেবুব হোক, যে গোলাপ সাক্ষাৎ দেবে কবি শেখ নজরুল, মুজিব মানে মুক্তি লেখক মোলায়েম সরকার।
Leave a Reply