1. : admin :
বায়ুদূষণের রাজধানী, ঢাকায় নির্মল পরিবেশ সৃষ্টি করুন - দৈনিক আমার সময়

বায়ুদূষণের রাজধানী, ঢাকায় নির্মল পরিবেশ সৃষ্টি করুন

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩

প্রায় দিনই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষিত বায়ুর শহরের তালিকার শীর্ষে থাকে ঢাকা। অবস্থাটা এমন যেন ঢাকা বায়ুদূষণের রাজধানী! দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকার বায়ুর মান অস্বাস্থ্যকর। এ নগরীর বায়ুদূষণ যে বিপজ্জনক মাত্রায় রয়েছে, সে বিষয়টি বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এলেও তা নিরসনে কার্যত কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। চরম অস্বাস্থ্যকর বায়ুর মধ্যে শ্বাস নিয়েই জীবন কাটাচ্ছে মেগা সিটির মানুষ। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিগত ৮ বছরের আটটি মে মাসের মধ্যে এবারই সবচেয়ে দূষিত ছিল রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান। ঢাকার বাতাসের ওপর সমীক্ষা করা বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) জানিয়েছে, মে মাসে একদিনও নির্মল বায়ু পায়নি শহরের মানুষ। মাসের ৩১ দিনের মধ্যে ১৬ দিনই বাতাসের মান ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’। বাকি ১৫ দিনের বায়ুর মান সহনীয় সীমার মধ্যে থাকলেও তা স্বাস্থ্যকর ছিল না। ঢাকার বাতাস এত দূষিত কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণে মূলত বিভিন্ন ধরনের নির্মাণকাজ প্রধান ভূমিকা রাখছে, যার মধ্যে নির্মাণ খাত ও ইটভাটা অন্যতম। এ ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, কলকারখানা থেকে নির্গত বিভিন্ন ধরনের কার্বন, শুষ্ক মৌসুমের কারণে সৃষ্ট ধুলাবালি, ময়লা-আবর্জনাসহ বর্জ্য পোড়ানো ধোঁয়া, ফিটনেসবিহীন গাড়ির কালো ধোঁয়া ইত্যাদি অন্যতম। এর ফলে ‘বস্তুকণা ২.৫’ নামের অতি সূক্ষ্ম পদার্থ বাতাসে স্বাভাবিকের চেয়েও পাঁচগুণ বেশি ভেসে বেড়াচ্ছে। বায়ুদূষণ থেকে সাধারণত ফুসফুসজনিত রোগ হয়। এর মধ্যে অ্যাজমা, অ্যালার্জি, বমি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি অন্যতম। মানসিক চাপ বা উচ্চরক্তচাপকেও অনেকে চিহ্নিত করে থাকেন। সাম্প্রতিক গবেষণায় ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত কিছু রোগও বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে বলে প্রমাণিত হয়েছে। ঢাকার বাতাস নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাকে তৎপর দেখা যায় না। সর্বশেষ ৫ মে বায়ুদূষণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন আদালত। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হয়ে দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। গবেষণা বলছে, বছর বছর বায়ুদূষণের মাত্রা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসীকে রক্ষায় সড়কে শোভাবর্ধনের নামে গাছ কাটা নয়, বরং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে আরও বেগবান করতে হবে। অহেতুক রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধসহ কালো ধোঁয়া ছড়ানো ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবাধ চলাচল বন্ধ করতে হবে। বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের পাশাপাশি নজর দিতে হবে রাজধানীর আশপাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার দিকে। আইন অমান্যে শাস্তির যে বিধান রয়েছে, তার কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। সর্বোপরি ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে সরকারকে নিতে হবে কার্যকর উদ্যোগ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com