1. : admin :
নার্সের সিজারে প্রসূতির মৃত্যুতে পালিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ক্ষোভে ভাঙচুর! - দৈনিক আমার সময়

নার্সের সিজারে প্রসূতির মৃত্যুতে পালিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ক্ষোভে ভাঙচুর!

ওমর ফারুক, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি ক্লিনিকে নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের পর ইয়াসমিন আক্তার নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার  পরপরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা ও নিহতের স্বজনেরা এসে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। গভীর রাতে হাসপাতালে এসে তদন্ত কমিটি ঘোষণা ও দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
রোববার (৩১ মার্চ) রাতে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া নারী ইয়াসমিন আক্তার (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী। নিহত ইয়াসমিনের নবজাতক শিশুপুত্র ও ইকরা নামে ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
নিহত প্রসূতির মা রাজিয়া খাতুন বলেন, “রোববার দুপুর ১২টার দিকে ইয়াসমিনকে ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, ইফতারের পর সিজার করা হবে। এসময় রোগীর স্বজনদের হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে। হাসপাতাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানানো হয় ইয়াসমিনের ছেলে সন্তান হয়েছে। পরে দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখি প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দেই”।
নিহতের চাচা কামাল হোসেন বলেন,”ইয়াসমিনের মায়ের ফোন পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেয়নি। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইয়াসমিনের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে অন্যত্র পাঠানোর নির্দেশ দেয় তারা। এসময় নিজেরাই অ্যাম্বুলেন্সে এনে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন,” ইয়াসমিনের সিজারিয়ান অপারেশনের সময় হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন না। ডাক্তার ছাড়া নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার কারণে আমার ভাতিজি মারা গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই হাসপাতালে এর আগেও অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে”।
এদিকে, ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে জড়ো হয়। একপর্যায়ে নিহত ইয়াসমিনের ১০ বছের শিশু ইকরার কান্না দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে ওই হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় তাঁরা ।
শৃঙ্খলা ফেরাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির।  তিনি বলেন, “ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর পর উত্তেজনা সৃষ্টির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনা হয়। আলোচনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। নিহতের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ চলমান “।
এ ঘটনায় লাইফ কেয়ার হাসপাতাল কর্তপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে গভীর রাতে হাসপাতাল পরিদর্শনের সাথে উপস্থিত সকলের সঙ্গে কথা বলে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনেন শ্রীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা। তিনি দৈনিক আমার সময়কে বলেন, “এ ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি হাসপাতালের বিষয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও প্রশাসনের কর্মকর্তার সমন্বয়ে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে”।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com