1. : admin :
তরুনীকে শায়েস্তা করতেই চালানো হয় পৈচাশিক নির্যাতন - দৈনিক আমার সময়

তরুনীকে শায়েস্তা করতেই চালানো হয় পৈচাশিক নির্যাতন

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪

রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের একটি ভবন থেকে শিকলবন্দী অবস্থায় এক তরুণীকে উদ্ধারের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতরা ওই তরুণীকে বন্দি অবস্থায় ধর্ষণ, নির্যাতন করত এবং এসবের ভিডিও ধারণ করে বিদেশে পাঠাতো।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সান (২৬), হিমেল (২৭) ও রকি (২৯) ও সালমা ওরফে ঝুমুর (২৮)। গতকাল রবিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে মাসুদ নামের এক আইনজীবীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে বিদেশে থাকে। বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ওই তরুণী বড় বোনের বাসায় থাকছিলেন। সেসময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে মাসুদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বিয়ে ছাড়াই মাসুদের সঙ্গে নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে বসবাস করা শুরু করেন ওই তরুনী। মাসুদ বিদেশে যাওয়ার সময় প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় হয় তরুণীর। ঝুমুরকে তার পরিচর্যার জন্য ওই ফ্ল্যাটে রেখে মাসুদ বিদেশ চলে যায়।

মাসুদের অনুপস্থিতিতে সান নামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ওই তরুনী। এ কারণে আইনজীবী মাসুদ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সান ও তার বন্ধুদের দিয়ে ওই তরুণীকে শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন। মাসুদের নির্দেশেই ওই তরুনীকে শিকলে বেঁধে পৈশাচিকভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এতে সহযোগিতা করেন সালমা। তিনি নির্যাতন ও বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ধারণা করে বিদেশে অবস্থানরত মাসুদের কাছে পাঠাতেন।

সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, আইনজীবী মাসুদের সঙ্গে লিভ টুগেটার করত। তবে মাসুদ বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকত। দেশে আসলে ওই তরুণীর সঙ্গে থাকত। মাসুদের নির্দেশনায় তরুণীর রুমে বসানো হয় গোপনীয় ক্যামেরা। বিভিন্ন সময় সান ও তার বন্ধু হিমেল ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার দৃশ্য গোপনে ধারণ করে পাঠানো হতো মাসুদের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ভিডিও পাঠানো হয়।

ডিসি তেজগাঁও আরও বলেন, গোপনে ভিডিও করার বিষয়টি ভুক্তভোগী তরুণী জেনে যাওয়ায় তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। শুরু হয় শেকলে বেঁধে নির্যাতন। হাত-পা ও মুখ বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালাতেন সান ও তার বন্ধুরা। যার প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিও ধারণ করে পাঠানো হতো মাসুদের কাছে। নির্যাতনের মাত্রা এমন পরিমানে করা হয় যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।

ডিসি আজিম বলেন, গত ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কলের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তরুণীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। ভুক্তভোগী তরুণী ঘুমিয়ে গেলে বাহিরে যায় সালমা, সান ও অন্যরা। কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগীর ঘুম ভেঙে গেলে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে চিৎকার দিলে পথচারীরা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। পুলিশ গিয়ে নবীনগরের একটি বহুতল ভবনের চারতলা থেকে তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আজিমুল হক বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে নির্যাতনের বেশিরভাগ ভিডিও ও ছবি সালমার মোবাইলে। কিন্তু সে মোবাইলটি লুকিয়ে ফেলেছে। সেটি পেলে পৈশাচিক নির্যাতনের আসল তথ্য ও ভিডিওর গন্তব্য সম্পর্কে জানা যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com