উপজেলা নির্বাচনে ভোটের দিন পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে-এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এখন প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিনজন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রধারী ছয় সদস্য থাকবেন।’ ‘প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ আনসার সদস্য থাকবেন এবং ছয়টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবেন। আনসার থাকবেন তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮জন সদস্য থাকবেন,’ যোগ করেন সচিব। শান্তি বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম পুরোপুরি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরগুলোতে শোরগোল ছিল না, আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনেরও তেমন খবর মেলেনি। এরপরও স্থানীয় এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখা যাচ্ছে না বলে কোনো কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে নির্বাচন বর্জন করলেও প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় অর্ধশত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সব মিলে ভোটের দিনগুলোয় পরিস্থিতি কী হবে, তা অনিশ্চিত। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়া এবং কাউকে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পেছনে ঝুঁকছেন। শেষ পর্যন্ত, তৃণমূল পর্যায়ের নেতা, বর্তমান মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, পরাজিত সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী ‘স্বতন্ত্র’ আইনপ্রণেতাদের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল নেতারা ইতোমধ্যেই নির্বাচনে জয়লাভের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চাইছেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোট ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৭ জন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা। তৃণমূলে দলীয় পোর্টফোলিওতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা মোট ৩০০ আসনের মধ্যে ১৮১টি আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জাতীয় নির্বাচনের মতো, উপজেলা নির্বাচনেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই হতে পারে, কারণ বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং কিছু ক্ষেত্রে জামায়াতের নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের প্রতিটি ধাপই যেন সুষ্ঠু, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ হয় ইসিকে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
Leave a Reply