1. : admin :
জুমার দিন যে কাজগুলোর মর্যাদা ও সাওয়াব বেশি - দৈনিক আমার সময়

জুমার দিন যে কাজগুলোর মর্যাদা ও সাওয়াব বেশি

ধর্মপাতা ডেস্ক
    প্রকাশিত : শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন শুক্রবার। এ জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এই দিনটি মুসলিমদের জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। জুমার দিন ও জুমার নামাজের গুরুত্ব স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে প্রকাশ করেছেন।
সুরা জুমআর ৯-১০ আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আযান দেয়া হয়, তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত চলো এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ খোঁজ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
জুমার গুরুত্ব অনুধাবন করেই মুসলিম উম্মাহ জুমার নামাজ আদায়ের জন্য নিজেদেরকে আগে থেকেই প্রস্তুত করে নেয়। জুমার দিন এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো মেনে চলা জরুরি। আর তাতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব।আর তাহলো-
গোসল করা
জুমার নামাজ আদায়ের নিয়তে উত্তমরূপে গোসল করা। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে জুমার নামাজ পড়বে সে যেন গোসল করে নেয়।
মেসওয়াক করা
মসজিদে প্রবেশের আগে ওজুর সঙ্গে উত্তমরূপে মেসওয়াক করা জরুরি। কেননা মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া মুখের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে অন্য নামাজির কষ্ট হতে পারে। তাই একটু সময় নিয়ে মেসওয়াক করা উত্তম।
পরিচ্ছন্ন পোশাক পড়া
জুমার দিন উত্তম ও পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় পড়ে মসজিদে যাওয়া উচিত। কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন। তাই জামা-কাপড় পরিপাটি হওয়া একান্তই কাম্য।
সুগন্ধি ব্যবহার
জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে গোসল করে উত্তম পোশাক পরে তার সঙ্গে সুগন্ধি ব্যবহার করবেন।
আগে মসজিদে যাওয়া
জুমার দিন আগে আগে মসজিদে যাওয়া আবশ্যক। কেননা যে যত আগে মসজিদে যাবে তার জন্য রয়েছে তত বড় ফজিলত। তা উট কুরবানির সাওয়াব দিয়ে শুরু হয়। আর শেষ হয় একটি ডিম সাদকার সাওয়াব দিয়ে।
মসজিদে হেঁটে যাওয়া
জুমার দিন মসজিদে হেঁটে যাওয়া উচিত। বাড়ি থেকে মসজিদের দূরত্ব যতবেশি মসজিদে গমনকারী ওই ব্যক্তির জন্য ততবেশি ফজিলত। কেননা মসজিদের দিকে প্রতিটি পদক্ষেপে বান্দার গোনাহ মাপ হয় এবং পদমর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তাই মসজিদে যাওয়ার সময় পথের এক পাশ দিয়ে আবার ফেরার পথে অন্য পাশ দিয়ে ফেরাটাই উত্তম।
ইমামের খুতবা শোনা
জুমার দিন ইমামের পাঠ করা খুতবা গুরুত্বসহকারে শোনা জরুরি। ইমামের খুতবার সময় নিশ্চুপ থেকে খুতবা শোনার কথা বলেছেন বিশ্বনবী। এমনকি কোনো ব্যক্তি যেন অন্যের কথা বলার সময় তাকে ‘চুপ করুন’ শব্দও না বলে।
জুমার নামাজ
যথাসময়ে জুমার নামাজ আদায় করা। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘হে ঈমানদাররা! যখন জুমার দিন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর স্মরণে (দ্রুতগতিতে মসজিদের দিকে) ধাবিত হও।’ জুমার খুতবা পাঠের পূর্বে মসজিদে উপস্থিত থাকা জরুরি।
বেশি বেশি দরূদ পড়া
জুমার দিন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়া আবশ্যক। হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সবদিন অপেক্ষা জুমার দিনটি হলো শ্রেষ্ঠ। এ দিনে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ দিনেই বিশ্ব ধ্বংসের জন্য শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এ দিনের পুনর্জীবিত করার জন্য দ্বিতীয়বার ফুঁক দেয়া হবে। আর এ দিন তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর। তোমাদের দরূদ নিশ্চয়ই আমার কাছে উপস্থিত করা হবে।
সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দরূদ আপনার কাছে কেমন করে উপস্থিত করা হবে অথচ আপনি তখন মাটি হয়ে যাবেন? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা নবীদের শরীর জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, বায়হাকি)
বেশি বেশি সুরা কাহাফ পাঠ করা
জুমার দিন নামাজের আগে কিংবা পরে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করা অনেক ফজিলতপূর্ণ। হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত নূরের আলোতে থাকবে।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সব ধরনের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জালও বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্ত থাকবে।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গোনাহ ছোট গোনাহকে বোঝানো হয়েছে। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য যে, কবিরা গোনাহ তওবাহ করা ছাড়া মাফ হয় না।’
দোয়া কবুলের সময়
জুমার দিন একটি সময় আছে যে সময়ের দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করে নেন। এর মধ্যে অন্যতম সময় হলো আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত। আলেমদের মধ্যে কেউ কেউ মত দেন, খুতবা পাঠের মধ্যবর্তী সময় হলো দোয়া কবুলের সময়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com