সন্ধ্যা নামলেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রধান সড়কে জ্বলছে না বাতি। নির্দিষ্ট দূরত্বে পর পর ল্যাম্প পোস্টগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও সেগুলোর বাল্ব নিভে আছে। দিনের পর দিন রাতের অন্ধকারে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এছাড়া, রাতে প্রধান সড়কে ল্যাম্প পোস্টের বাতি যেমন থাকে না, তেমনই ওইসব সড়কে দেখা মেলে না সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের টহল। এসব সড়কে অন্ধকারের সুযোগ নেয় ছিনতাইকারীরা। অনেকেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে টাকা, গহনা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়াচ্ছেন। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে রাজধানীতে অধিকাংশ জায়গায় সড়কে জ্বলছে না বাতি। দৈনিক পত্রিকা থেকে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০০ ফিট হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড দিয়ে মাটিকাটা ফ্লাইওভার হয়ে কালশী মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০০টি সড়কবাতি জ্বলে না। মাটিকাটা ফ্লাইওভারের প্রায় অর্ধেক সড়ক বাতিই জ্বলে না। ইসিবি মোড় থেকে কালশী রোডের মাঝখানে পেট্রোল পাম্প থেকে কালশী মোড় পর্যন্ত প্রায় সব সড়কবাতি জ্বলে না। এ ছাড়া যেসব স্থানে দুই পাশে সড়কবাতি দেওয়া সেসব স্থানে এক পাশেরগুলো জ্বলতে দেখা গেছে, যা সড়কের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার কামরাঙ্গীর চর বেড়িবাঁধ, কিল্লার মোড়, কামালবাগ, শোয়ারিঘাট এলাকায় কোনো সড়কবাতি জ্বলছে না। অনেক জায়গায় জ্বলে না বেশ কয়েক মাস ধরে। রাজধানীতে এমন সড়কের বাতির বেহাল দশায় বিভিন্ন এলাকা সন্ধ্যার পর থেকে চুরি-ছিনতাইয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভয়ও বেড়েছে। মূল সড়ক থেকে ওলিগলির বেশিরভাগ সড়কবাতি নষ্ট হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। একদিকে অন্ধকার, অন্যদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এখনো মাঠে পুরোপুরি কাজ শুরু করতে পারেনি পুলিশ। সরকার পতনের পর জনরোষে পড়ে পুলিশ। এই সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অপরাধীচক্র। মূলত সড়কবাতি দেখভাল করে থাকে রাজউক ও সিটি করপোরেশন। বিগত বছরে এই বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ত্রুটিপূর্ণ বাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাতি নষ্ট হলে তা ডিএনসিসি মেরামত করবে। যেহেতু বর্তমানে ঢাকা সিটি মেয়ররা রাজনৈতিক বেড়াজালে আত্মগোপনে রয়েছে, সেহেতু এই বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে রাজউককে নষ্ট বাতি মেরামতের দায়িত্বে দেওয়া হোক এবং চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে যেসব বাতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়নি তা ওই প্রতিষ্ঠানকে মেরামত করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা আশা করব, সড়কে সুশৃঙ্খল পরিবেশ গড়ে তুলে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
Leave a Reply