আইন মন্ত্রণালয়ের অবহেলায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৪ বছর শেষ হয়ে ৫ম বছর চললেও নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে পারে নাই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) প্রদর্শক, গবেষণা সহকারীসহ অন্যান্য পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২২ অক্টোবর ২০২০। যার স্মারক নং ৩৭.০২.০০০০.১০১.১১. ০০২.১৯.১৯২২৮।
২০২১ এর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এ সকল পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শক, গবেষণা সহকারীসহ চারটি পদ ছাড়া বাকি পদগুলোর ভাইভা শেষ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগ কার্যক্রম যোগদানের মাধ্যমে শেষও হয়েছে। নানা জটিলতা কাটিয়ে প্রায় আড়াই বছর পরে ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বাকি চারটি পদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভা ৪ মে ২০২৪ শুরু হয়ে ৬ জুন ২০২৪ শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৪ বছর শেষ হয়ে ৫ম বছর চলছে। ভাইভা প্রায় ৫ মাস আগে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।
ফলপ্রার্থীরা এই ফলাফলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এবিএম রেজাউল করিম এবং উপপরিচালক মো. শাহজাহানের সাথে দেখা করে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান যে, ‘ফল প্রকাশের জন্য কোটা সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত প্রয়োজন। কোটার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়া তাঁরা ফল প্রকাশ করতে পারবেন না।’ তাই তাঁরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে বলা হয় কোটা সংক্রান্ত মতামতের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এখনো মতামত জানিয়ে জবাব দেয় নাই।
পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব উদয়ন দেওয়ানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘কোটা সংক্রান্ত মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় থেকে এখনো মতামত দিয়ে ফিরতি চিঠি দেয় নাই। কোটা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিলেই তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’ কোটা সংক্রান্ত মতামতের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠি আইন মন্ত্রণালয় অনেক দিন ধরে পড়ে আছে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে ফিরতি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে না। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের বিষয়ে অবহেলার কারণে মাউশি চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে পারছে না। এতে করে ফলাফল প্রত্যাশীরা দিন দিন হতাশ ও উদ্বিগ্ন সময় কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রদর্শক, গবেষণা সহকারীসহ চারটি পদের নিয়োগ প্রত্যাশীরা।
প্রদর্শক, গবেষণা সহকারীসহ চারটি পদে নিয়োগপ্রত্যাশীদের প্রতিনিধি লিটন আহমেদ, ইমরান হোসেন, আরশাদ হোসাইন, জোবায়ের আহমেদ বলেন, বেকারদের চরম উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা থেকে মুক্তি দিতে দ্রুত ৪ পদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো। উল্লেখ্য, একই বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য পদের নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদান সম্পন্ন করে ইতিমধ্যে প্রায় তিন বছর চাকরি করছেন।
Leave a Reply