1. : admin :
বিশ্ব অ্যাজমা দিবস-২০২৩ - দৈনিক আমার সময়

বিশ্ব অ্যাজমা দিবস-২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩

 

আগামী ২ মে ২০২৩ পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব অ্যাজমা দিবস, এবারের প্রতিপাদ্য- Asthma Care For All, অ্যাজমা চিকিৎসায় সবার সমান অধিকার! অ্যজমা চিকিৎসা বিশ্বব্যাপি সাৰ্বজনীন হোক, চিকিৎসা সামগ্রী সহজলভ্য হোক এবং সকল স্তরের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে হোক-এটাই মূল চাওয়া। আমাদের দেশে ঔষধের খরচ উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম হলেও বাস্তবতা বলে দীর্ঘমেয়াদী অসুখগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত অসুখটি অ্যাজম-হোক রোগী চিকিৎসক বা অচিকিৎসক! নিজের ইচ্ছেমতো উপশমকারী ইনহেলার/ব্লু ইনহেলার ব্যবহার অথবা কোনো এক কালে কিচিৎসকের পরামর্শে দেয়া প্রতিরোধকারী ইনহেলার অল্প সময় ব্যবহার অথবা কয়েকমাস বা সারাবছর মন্টিলুকাস্ট খেয়ে যাওয়া-অ্যাজমার এই যে সেল্ফমেড চিকিৎসা তা আদতে খুব নিরীহ মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে রোগীর জন্যে ধ্বংসাত্মক

মনে রাখতে হবে, অ্যাজমা চিকিৎসার অনুষংগ মূলত দুটি- প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এবং ঔষধ! এলার্জি উদ্রেককারী উপাদান যেমন- ধূলাবালি, স্যাতস্যাতে পরিবেশ, পরাগরেণু, যেকোন স্প্রে, প্রাণির লোম বা পাখির পালক ইত্যাদি থেকে সতর্ক থাকা, খাবারের কোনো উপাদানে এলার্জি থাকলে তা চিহ্নিত করা ও পরিহার করা, ধূমপান ত্যাগ করা, কাজের পরিবেশগত ঝুঁকি যাচাই করা, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা মানসিক উৎকন্ঠা বা দুশ্চিন্তা না করা, কিছু ঔষধ সেবনের ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং প্রতি বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিন নেয়ার মাধ্যমে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে সম্ভব! ঔষধের মধ্যে মূলত দু’ধরণের ঔষধ অ্যাজমা তে কার্যকরী-উপশমকারী এবং প্রতিরোধক! উপশমকারী ঔষধ সাময়িক আরাম দেয়, প্রতিরোধক ঔষধ রোগের ধরণ বা প্রকৃতি কে নিয়ন্ত্রণে রাখে, ভবিষ্যৎ অ্যাজমা এটাকে প্রতিরোধ করে, ক্ষেত্রবিশেষে কমবয়স্ক রোগীদের অ্যাজমা নিরাময়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে! মুখে খাওয়ার ঔষধ থাকলেও অ্যাজমাতে ইনহেলারই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখে! উপশমকারী ইনহেলার গুলো সাধারণত নীল রংয়ের এবং প্রতিরোধকারী ইনহেলার গুলো সাধারণত গোলাপি বা বেগুনি রংয়ের হয়ে থাকে!এই কালার কোড অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর মেডিসিন হিস্ট্রি নেয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সুবিধা দেয়

অ্যাজমা রোগিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় যে ইনহেলার সেটি হচ্ছে উপশমকারী ইনহেলার বা ব্লু ইনহেলার যাতে আছে সালবিউটামল-দাম তুলনামূলক সবচেয়ে কম এবং খুব দ্রুত কাজ করে শ্বাসকষ্ট অনেক সময় মুহূর্তে কমিয়ে আনতে পারে এটি, একারণে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ বা ফলোআপ আর না করে মোবাইলের মতো ব্যাগে বা পকেটে এটিকে নিত্যসঙ্গী বানান-চিকিৎসা বন্ধ রেখে বা অনিয়ম করে শ্বাসকষ্ট বাড়ান এবং সেসময় ব্লু ইনহেলার ব্যবহার করে সাময়িক আরাম নিশ্চিত করেন।

গবেষণা বলছে, সঠিক চিকিৎসা অনুসরণ যদি কেউ না করে এবং এরজন্যে যদি কাউকে সালবিউটামল ইনহেলার (বা ব্লু ইনহেলার) গড়ে প্রতিদিন দুই চাপ করে মোট দুইশ চাপ(এক ক্যানিস্টার বা এক ইনহেলার=দুইশ চাপ) ইনহেলার ৩ মাসের মধ্যে নিতে হয়, তাহলে তার ভবিষ্যতে তীব্র অ্যাজমা এটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে অনেক বেশিশুধু তাই নয়, কারো যদি সালবিউটামল ইনহেলার(বা ব্লু ইনহেলার) গড়ে প্রতিদিন ছয় চাপ করে মোট দুইশ চাপ (এক ক্যানিস্টার বা এক ইনহেলার=দুইশ চাপ) ইনহেলার ১ মাসের মধ্যে নিতে হয় এবং প্রতি মাসে যদি তাঁর একটি ইনহেলার হিসেবে সারাবছর মোট ১২টি ইনহেলার বা তার বেশি প্রয়োজন হয়, তাহলে তার মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি।

অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে তাই ব্লু ইনহেলারের ইচ্ছামতো ব্যবহার আর নয়! চাই সঠিক জীবনাচরণ এবং সঠিক চিকিৎসা! চাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিয়মিত ফলোআপ! প্রশান্তির শ্বাস হোক নিত্যসঙ্গী।ডা. মুশফিক নেওয়াজ আহমেদ বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com