1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
বিনিয়োগে ভাটা, অর্থনীতিতে বৈপরীত্য - দৈনিক আমার সময়

বিনিয়োগে ভাটা, অর্থনীতিতে বৈপরীত্য

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে এক ধরনের বৈপরীত্যের মুখোমুখি হয়েছে। একদিকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে-যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত। অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি বেসরকারি বিনিয়োগ ভয়াবহভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে প্রাইভেট সেক্টর ক্রেডিট প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬.৪৯ শতাংশে, যা ইতিহাসের সর্বনি¤œ। আগস্টেও এই হার ৮.৮৮ শতাংশের বেশি হয়নি। উদ্যোক্তারা নতুন ঋণ নিতে আগ্রহী নন, কারণ উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতি ও ব্যাংক খাতের দুর্বল ব্যবস্থাপনা তাদের আস্থায় ধাক্কা দিয়েছে। এর ফলে শিল্প ও ব্যবসার সম্প্রসারণ স্থবির হয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি কমে গেলে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিও ঝুঁকিতে পড়বে। অন্যদিকে সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বেড়েছে উল্টো হারে। জুন শেষে এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৩.০৯ শতাংশে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি মেটাতে সরকারের ব্যাংকনির্ভরতা বাড়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে ব্যাংকের ঋণ বিতরণের বড় অংশ সরকারকে চলে যাচ্ছে, বেসরকারি খাত কার্যত ‘ক্রাউড আউট’ হচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে। এ অবস্থায় উন্নয়ন কার্যক্রমেও ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২.৩৯ শতাংশ। অবকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে চালিকা শক্তি এডিপি হওয়া উচিত, তা এখন গতি হারাচ্ছে। বাজেট ঘাটতি বাড়ছে, অথচ খরচও যথাসময়ে হচ্ছে না। তবে সাধারণ মানুষের জন্য একটুখানি স্বস্তি রয়েছে-আগস্টে সাধারণ মুদ্রাস্ফীতি নেমে এসেছে ৯.৭০ শতাংশে, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের দামে কিছুটা স্থিতি এসেছে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি এখনো দুই অঙ্কের কাছাকাছি, যা নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য বড় বোঝা। বর্তমান অর্থনৈতিক চিত্র স্পষ্ট করে দিচ্ছে-বিনিয়োগ পরিবেশের অনিশ্চয়তা কাটাতে হবে অবিলম্বে। ব্যাংক খাতে সুদের হার যৌক্তিক করা, স্বচ্ছতা ও আস্থা ফিরিয়ে আনা, এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকে রাজস্ব আয় বাড়াতে কার্যকর সংস্কার নিতে হবে, যাতে ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে না হয়। একইসঙ্গে এডিপি বাস্তবায়ন দ্রুততর করতে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অর্থনীতির ভিত মজবুত করতে হলে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহের পাশাপাশি দেশীয় বিনিয়োগকে পুনরুজ্জীবিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত নীতি ও কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com