কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার শাফিয়া খাতুন (৩৮) চরম দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। অভাব-অনটনে চলে তাঁর সংসার। সংসারে রয়েছে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্বামী। স্বামী মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করলেও বেশির ভাগ সময় থাকে বেকার। কিন্তু অসুস্থতায় এখন শরীরটা অচল হয়ে পড়েছে। তাই আগের মতো আর কাজ করতে পারেন না। সংসারে তাঁর নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এমন অবস্থাতেও তার দুই সন্তান করছে পড়ালেখা। তার ছেলে দশম শ্রেণীতে ও মেয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। অভাব থাকলেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চায় তাদের দুই সন্তান।
এতে তাঁর সংসার খরচ তো দূরে থাক, ঠিকমতো তাঁর চিকিৎসাটুকুও হয় না। ঘরে অসুস্থ স্ত্রী। তাঁকেও চিকিৎসা করাতে পারেন না তিনি। শাফিয়া খাতুনের বাপের বাড়ি রাজিবপুরের মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে। কিন্তু ১০ বছর আগেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে তার পিতৃ সম্পত্তি। এরপর রাজিবপুরে এসে জমি বর্গা নিয়ে থাকেন ছয় বছর। কিছুদিন পর সেখানেও আর থাই হয়নি। কয়েক বছর বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ভাড়া থাকে খুব কষ্ট করে।
এরপর এলাকার ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিরা আশ্রয় প্রকল্পের ঘরে থাকার ব্যবস্থা করেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয় প্রকল্পের ঘরটির মালিক মানিক। কিন্তু তিনি আশ্রয় প্রকল্পের ঘরটিতে থাকেন না। এ বিষয়ে মানিক জানায়, আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি তাই ওখানে থাকার অবস্থা নাই। আমি বাসা ভাড়া করে থাকি। এ কারণে আশ্রয় প্রকল্পের ঘরে থাকি না।
শাফিয়া খাতুন জানান, বাড়ি নাই, খাওন নাই, তাও দুই সন্তান পড়ালেহা করতেছে। আমরা কই যাইমু। এক জায়গায় ঠাঁই পাইছিলাম তাও বের করে দিছে। আমার পোলাপান গুলো পড়ালেহা কইরা মানুষের মত মানুষ হওয়া চায়। কিন্তু আমাগোরে তো খাবারের টেহাই হয় না। পোলাপান দুইটা মানুষের মত মানুষ হইবার চায়। আমি এক্সিডেন্ট করছি। ওষুধ কেনার ট্যাহা নাই ঘরে পইড়া আছি। মাসুদ প্রিন্সিপাল স্যার আমাগোরে আপাতত একটা ঘরে ঠাঁই কইরা দিছে, মেলা সাহায্য করতেছে। ডিসি স্যার ভাড়া দিতে চাইছে। ডিসি স্যার আমাগোরে খোঁজ খবর নিছে। আমার এটা ঘরের ব্যবস্থা কইরা দেওয়ান লাগবো না হলে আমি এই পোলাপান গুলা নিয়া কই যাইমু।
Leave a Reply