কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) পরিবার নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বাংলার নতুন বর্ষ ১৪৩০ কে বরণ করে নিয়েছে। তবে পবিত্র মাহে রমজানের কারণে অন্যান্য বছরের তুলানায় এবারের আয়োজন ছিল স্বল্প পরিসরে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিনটিকে বরণ করে নেয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিসে বাঙালির সংস্কৃতি ও দেশপ্রেমের সাথে মিশে থাকা বিভিন্ন গান, কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সকলে।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির জাতীয় জীবনে একটি উৎসব মুখর দিন। দিনটি বাঙালি জাতির সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে। প্রতি বছরই আমরা দিনটি পালন করে থাকি, তবে এবছর রমজানের কারণে দিনটিকে স্বল্প পরিসরে উদযাপন করা হয়েছে। আমরা দিনটি উপলক্ষে ছাত্র শিক্ষক মিলে একটা শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি, শুভেচ্ছা বিনিময়ে বাঙালি সংস্কৃতি ও দেশপ্রেম সম্পৃক্ত বিভিন্ন গান কবিতা পরিবেশন করা হয়েছে। আমি মনে করি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিনটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করেছে।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের বাঙালি জাতির অস্তিত্বের যে জায়গাটা সেটা হচ্ছে বাঙালির সংস্কৃতি। ধর্মীয় পরিচয়ে আমরা অনেকে অনেক ধর্মে বিশ্বাসী হলেও বাঙালি সংস্কৃতির সাথে এই ধর্মের কোনো বিরোধ নাই। ধর্ম এবং সংস্কৃতি এটা সব সময় পাশাপাশি থেকেছে। যারা আজকে ধর্মের নামে বিভিন্ন সমালোচনা করে আমাদের অস্তিত্বে আঘাত করতে চায় সে দিকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আমরা যে বাঙালি এটাই হচ্ছে আমাদের বড় পরিচয় এবং আমরা এই বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে বিশ্ব দরবারে আরোও অনেক দূর এগিয়ে যাবো।’
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান মিলকী বলেন, ‘ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করে দিনটিকে উদযাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল এবং সেই মোতাবেক বৈশাখী শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়ের প্রসঙ্গ আমরা দেখেছিলাম এবং এর পরবর্তীতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়েছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে সকলের পারস্পরিকতা, সৌহার্দ্য এবং ভাতৃত্বপূর্ণ যে পরিবেশ সেটির জন্য। আর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রেইনবো পেইন্টের সহযোগিতা এবং বৃত্ত কুবির ব্যবস্থাপনায় ক্যাম্পাসে আলপনা করা হয়েছে।’
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল ইসলাম শেখ, শাখা ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে রেইনবো পেইন্টসের সহযোগিতায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র গ্রাফিতি সংগঠন বৃত্ত কুবি’র উদ্যোগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে গোল চত্ত্বর পর্যন্ত আলপনা আকাঁ হয়েছে।
Leave a Reply