আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তারাই হবে দেশ গড়ার কারিগর। এই শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা। শিশুদের শারীরিক শক্তি ও মানসিক চিন্তা-চেতনা, বুদ্ধিমত্তা বিকাশে লেখাপড়ার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে খেলাধুলা এবং বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। খেলাধুলা শিশুদের সৃজনশীলতা এবং কল্পনা বিকাশেও সহায়তা করে। একটা সময় ছিল, যখন ফাঁকা জায়গা, খেলার মাঠ ও স্কুল-কলেজের খেলার চত্বর খেলাধুলার কর্মকাণ্ডে মুখর থাকত। কিন্তু এখন? আগের সেই দিন আর নেই। দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেই নিজস্ব খেলার মাঠ। তাই রাজধানীর জনসংখ্যার তুলনায় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য খেলার মাঠ, পার্ক, গণপরিসরের সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাই স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, এমনকি বিভিন্ন শহরে স্টেডিয়াম নামধারী মাঠের ভেতরে ও বাইরে ছোট-বড় অংশ দখল, খেলাধুলার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং খেলার মাঠ, পার্ক থাকলেও অনুন্নত ও অপরিকল্পিত এলাকায় এসবের সংকট তীব্র। বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে বেসরকারি পর্যায়ে এমন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোর কোনো খেলার মাঠ নেই। নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনায় খেলার মাঠকে বিনোদন ক্ষেত্রের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামো হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি। তারপরেও এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ তৈরির ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও ভাবনা-চিন্তা খুবই স্বল্প। এই বাস্তবতায় খেলাধুলার সুযোগকে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার মৌলিক অধিকার বিবেচনা করে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, কার্যকর বাস্তবায়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। শুধু পাঠদানের মধ্যেই একটি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যেসব চর্চার প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে হবে। তাই পরিকল্পনা মাফিক নতুন খেলার মাঠ, পার্ক তৈরির উদ্যোগও অপ্রতুল। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুতই এদিকে নজর দেয়া দরকার। ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবার এখনই সময়। শিক্ষার্থীদের জন্য লেখাপড়ার ভালো পরিবেশের পাশাপাশি একটি ভালো মাঠের নিশ্চয়তা যেন দেয়া হয়, সেটাই আমাদের কাম্য।
Leave a Reply