তাই আগামীকে সুন্দর করতে এই ক্ষেত্রের কর্মযজ্ঞ যেমন বৃহৎ, তেমনি দূরদর্শিতার দাবিদার। এর মধ্যে তিনটি বিষয় কালে ও সমকালে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
এক. ভাষা:
ভাষা তথ্যের বাহন। সংবাদ, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সংগীত, সিনেমা, সরকারি-বেসরকারি প্রেস রিলিজ, ডকুমেন্টারি, ডকু-ফিকশন, গণমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপন এমনকি বিলবোর্ডসহ যে সমস্ত উপাদান আমাদের তথ্য দেয়, সেগুলোর ভাষা যত হৃদয়গ্রাহী ততই জনপ্রিয়। তবে হৃদয়গ্রাহিতার সাথে ভাষাকে হতে হবে শুদ্ধ। কারণ শুদ্ধতা শুধু ভাষার সৌন্দর্য নয়, মর্যাদার প্রথম মাপকাঠি।
সহজবোধ্য ভাষা প্রগতির সোপান। বিশ্ব যত আধুনিক হয়েছে, ভাষাও তত সহজ ও সাবলীল হয়েছে। দেশি-বিদেশি যে ভাষাই ব্যবহৃত হোক, চেতনা বিস্তারের মাধ্যম জনযোগাযোগ ক্ষেত্রে তাই শুদ্ধ, সহজ ও সুন্দর ভাষার বিকল্প নেই।
দুই. তথ্য-প্রযুক্তি:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার) প্রভৃতি যখন বিশ্বব্যাপী মানুষের ভার্চুয়াল সম্মেলনের বিশাল প্লাটফর্ম, পাশাপাশি ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম তখন তথ্য পরিবেশন ও জনযোগাযোগে ই-মেইলের চেয়ে এগিয়ে।
অংশী নির্বাচন জনযোগাযোগে সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা প্রচার-প্রচারণার উপস্থিত সংস্কার ও পরিবর্তন সকলে সমানভাবে নিতে পারবেন না সেটা স্বাভাবিক, অনেকের প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। জনযোগাযোগের সূত্রানুসারে, এক দশক বা তার অধিক সময় ধরে চলে আসা কোনো তথ্যপ্রবাহে নতুনত্ব আনতে অংশীদারী গোষ্ঠীরও পুণর্গঠন আবশ্যক।
সুতরাং সরকারি-বেসরকারি স্পর্শকাতর খাতে যুক্ত ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ প্রভৃতির এক দশকের বেশি পুরনো গ্রুপ বিচক্ষণতার সাথে আশু পুণর্গঠন শ্রেয়। খানিক পরিশ্রমসাধ্য বিধায় টেকসই আগামীর জন্য এ উদ্যোগ নিতে জনসংযোগকর্মীদের উদ্যম প্রয়োজন।
তিন. পেশাদারিত্ব:
পেশাদারিত্ব সমাজের কাঠামোকে মজবুত করে, আগুয়ান করে। শুধু তথ্য ও জনসংযোগকর্মীই নয়, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, নাট্যনির্মাতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, সংবাদ উপস্থাপক এমনকি বিজ্ঞাপনের কপিরাইটারের পেশাদারিত্বও সমাজকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখে।
অভিজ্ঞতা ও অনুশীলনে লব্ধ পেশাদারিত্বে নির্মিত বস্তু বা সেবা মানুষকে বেশি নাড়া দেয়। দেখা যায়, বড় বড় বক্তৃতার চাইতে শাহবাগে তরুণদের গাওয়া একটি গান মানুষকে অনেক বেশি ছুঁয়ে গেছে। সেই শিল্পী-গীতিকার-সুরকারেরা চমৎকার পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন বলেই এমনটা হয়েছে।
তথ্য ও জনযোগাযোগ একটি চিন্তাধর্মী ও সদাতৎপর কর্মধারার পেশা। এই ধারায় অভিজ্ঞ পেশাজীবীদের অর্জিত দক্ষতার সময়োচিত ও প্রজ্ঞাময় প্রয়োগ প্রগতির পথে চলাকে ত্বরান্বিত করবে।
Leave a Reply