1. : admin :
জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক নাজমুল’র গল্প - দৈনিক আমার সময়

জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক নাজমুল’র গল্প

মোঃ শরিফুল ইসলাম, রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের শঙ্কর মাধবপুর গ্রামে জন্ম নাজমুলের। ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে ছোট্ট একটি পাট কাঠির ঘর, তাও অন্যের জমিতে। এখানকার মানুষের দারিদ্রতা আর দুঃখ-শোকে কাটে নিত্যদিন। গ্রামের কোলঘেঁষে বয়ে চলেছে যে নদীটি তার নাম সোনাভরি। পুরো গ্রামটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে শান্ত এ নদীটি। এ নদী ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে ছোট্ট জনপদ মাধবপুর। মানব সভ্যতার ক্রমবর্ধমান ছোঁয়ায় আজকের বাণিজ্যিক শহরে স্থাপিত হয়েছে সুউচ্চ অট্টালিকা, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল সহ নাগরিক জীবনের সকল সুযোগ সুবিধা। অথচ অধিকাংশ লোকজনের জীবন ও জীবিকা মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অভিমানী, অবহেলিত গ্রামটি।
তিনি কখনও রাজমিস্ত্রী, কখনও বা শ্রমিক, আবার পরিবারের চাহিদা মেটাতে কাজ করতে যেতে হতো এলাকার বাইরে। নেই কোন নিজস্ব বাড়ির ভিটে, তবুও তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি এসএসসি ২০১৮ , এইচএসসি ২০২০ সালে পাশ করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটে ২৪ তম, এ ইউনিটে ৩১১তম স্থান লাভ করে। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন।
নাজমুল যার জন্ম হয়েছে অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবারে, কিন্তু তার স্বপ্নযাত্রায় বাধা হতে পারেনি। শত প্রতিকূলতা তিনি তার লক্ষ্য অটুট রেখেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়াটা ছিল তার স্বপ্ন জয়ের মত, তিনি প্রমাণ করেছে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে নিজেকেই বাস্তবতার সাথে লড়তে হয়। তার এই অসম্ভব কাজকে সম্ভব করায় প্রশংসায় ভাসছেন এলাকাবাসীর।
যেখানে অনেকেই সব রকম সুবিধা পেয়েও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটা হয়ে থাকে অধরা স্বপ্নের মতো। এখানে তিনি শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছে এক অনন্য মাত্রায়। তিনি যেন তার এই লক্ষ্য ঠিক রেখে সামনের দিকে আরো এগিয়ে যেতে পারে, তাই তাকে সাহস ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, সহকারী রেজিস্টার (গ্রেড-৫ম) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজিবপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মশিউর রহমান রতন।
মশিউর রহমান রতন জানান, নাজমুলকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি সে অনুপ্রাণিত হয়েছে ও সাহস পাচ্ছে। আমার বিশ্বাস নাজমুল আরও উদ্যমী হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সবসময় হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চাই, চাই তাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে এবং সুখে দুখে তাদের পাশে থাকতে। আমি মনে করি সচ্ছল মানুষ গুলো যদি হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তারা অনেকটাই উপকৃত হবে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সঠিক নেতৃত্ব দ্বারা পিছিয়ে পরা রাজিবপুরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। নাজমুলের মতো মেধাবী ছেলেদেরকে সামনে নিয়ে আসায় রাজিবপুর মডেল প্রেস ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com