প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন – সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এম পি স্যার।
অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ মঞ্চ অভিনেত্রী হিসেবে পুরষ্কার গ্রহণ করেন ফরিদা লিমা।
ফরিদা আকতার লিমা Farida Aktar Lima
(Farida Lima)
জন্ম 05 ই অক্টোবর ১৯৮০
প্রতিষ্টাতা সদস্য, অনুস্বর নাট্যদল। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ (সাবেক নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগ)থেকে বিএ (অনার্স – ফার্স্ট ব্যাচ) এবং এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।ছোটবেলা থেকেই একটি সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বেড়ে উঠেছেন।বাবা খুব ভালো বাঁশি ও হারমোনিয়াম বাজাতেন একসময়, বোঝার বয়স থেকেই বাসায় হারমোনিয়াম ও বিভিন্ন ধরনের বাঁশি দেখে বড়ো হয়েছেন ফরিদা লিমা। এরপর সংগীত বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র আর স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অভিনয়,গান ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে পথচলা।তাই যখন উচ্চ শিক্ষার্থে বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ এলো তখন তিনি অন্য মাঝারি মানের বিষয় নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও তিনি থিয়েটার ই ফার্স্ট চয়েস দেন যদিও তার জানা ছিলো না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও পড়ানো হয়। তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্বে এ্যডমিশন ফর্ম নিয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে দুর্দান্ত দারুণ সব সময়। জীবনকে বদলে দেবার জীবন ভাবনায় আমূল পরিবর্তনের সূতিকাগার প্রিয় বিভাগ ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ। সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ যিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান ; নিজের বাবা মায়ের পরেই যাঁর অবদান এবং প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ডঃ ইসরাফিল শাহীন,ওয়াহিদা মল্লিক জলি,রহমত আলি প্রত্যেকের ভূমিকা অসামান্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিনয়ের প্রথম অভিজ্ঞতা কবর নাটকের মাধ্যমে।এরপর অধ্যাপক ওয়াহিদা মল্লিক জলি নির্দেশিত সংস্কৃত নাটক “মধ্যমা ব্যায়োগ”, ডঃ ইসরাফিল শাহীন নির্দেশিত সেম্যুয়েল বেকেট এর নাটক ” ওয়েটিং ফর গোডো” আন্তন চেখভের নাটক “থ্রি সিস্টার্স” এবং সর্বোপরি অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ নির্দেশিত লোকনাট্য “বেহুলার ভাষান” নাটকে অভিনয় জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার একটি। এর পর এম এ ফাইনালের পর সার্ক নাট্য উৎসব ২০০৫ এর জন্য ইশরাত নিশাত আপার নাটক “বিরাঙ্গনা” ভারতের চারটি প্রদেশে মঞ্চায়ন হয়। এগারো দিনের এই সফরে আমাদের সবার প্রিয় নিশাত আপার রুমমেট ছিলেন ফরিদা লিমা সেও এক অসাধারণ সময়, যে সময়ে নিশাত আপাকে খুব কাছে থেকে দেখেছেন তিনি;ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খাঁ এরসাথে নিজস্ব ভবনে সরাসরি দেখা ও কথা বলার সুযোগ হয়েছিলো এই ট্যুরেই। এরপর ২০০৭ এ নাট্যদল থিয়েটার আর্ট ইউনিট এ যোগদান করেন রোকেয়া রফিক বেবী’র নির্দেশিত নাটক “আমিনা সুন্দরী” নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে গ্রুপ থিয়েটারের সাথে যুক্ত হয়। এরপর ডঃ মোহাম্মদ বারি নির্দেশিত জহির রায়হানের গল্প অবলম্বনে নাটক “সময়ের প্রয়োজনে”। ২০১৯ সালে অনুস্বর নাট্যদলে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ডঃ মোহাম্মদ বারি নির্দেশিত নাটক ” অনুদ্ধারনীয়” নাট্যকার আর্থার মিলার এর নাটক ” দ্যা প্রাইস” অবলম্বনে নাটক “মূল্য অমূল্য”, নাট্যকার মাহবুব আলম এর নাটক এবং নির্দশনা সাইফ সুমন ” তিনকড়ি” ও সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস “খেলারাম খেলে যা” অবলম্বনে নাটক “যাদুকর” নাটকে অভিনয় করছেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে সুমন মজুমদারের উপন্যাস অবলম্বনে “রায়মঙ্গল” নাটকে সাইফ সুমনের নির্দেশনায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।অনুস্বরের সবগুলো নাটকই নিয়মিত ঢাকার জাতীয় নাট্যমঞ্চে মাঞ্চায়িত হচ্ছে।
শিশু নাটক নাট্যকার সেলিনা হোসেন এর “বনের রাজা” জ্যঁ পল সাঁর্ত এর নাটক “ম্যন উইদাউট স্যাডো”নাটকে নির্দেশনা এবং নাট্যকার বদরুজ্জামান আলমগীর এর নাটক এবং কামাল উদ্দিন কবির এর নির্দেশনায় “অহরকন্ডল”এর সহকারী নির্দেশক ছিলেন। নাটক অহরকন্ডল, সময়ের প্রয়োজনে, মূল্য অমূল্য, তিনকড়ি এবং যাদুকর নাটকে পোশাক পরিকল্পনা করেন।
তিনি বেশ কয়েকটি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন – ইম্প্রুভাইজেশন এবং ফিজিক্যাল ট্রেইনিং এর উপর কর্মশালা পরিচালনা করেছেন প্রঙ্গনে মোর, ঢাকা নাট্যদলের সাথে, থিয়েটার এক্সপেরিয়েন্স এর উপর কর্মশালা পরিচালনা করেছেন নাট্যবিন্দু, মুন্সিগঞ্জ নাট্যদলের সাথে। ইমপ্রুভাইজেশন ও থিয়েটার গেমস নিয়ে কর্মশালাপরিচালনা করেছেন নাট্যকেন্দ্র,ঢাকা নাট্যদলের সাথে। জন্মসূত্র নাট্যদল ঢাকা এর সাথে এক্টিং মেথড ও এক্টরস প্রিপারেশন এর উপর কর্মশালা পরিচালনা করেছেন।এছাড়াও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নাট্যদলের সাথে ফিজিক্যাল এক্টিং ও ইম্প্রুভাইজেশন নিয়ে কাজ করেছেন।
পেশাগতভাবে দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি টেলিভিশন মিডিয়ার সাথে যুক্ত। মাঝে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় যুক্ত থাকলেও বর্তমানে তিনি দুরন্ত টেলিভিশনে সিনিয়র প্রযোজক হিসেবে কর্মরত আছেন।
নাটক ফরিদা লিমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নাটকের এবং মঞ্চ নিয়েই থকতে চান আজীবন।
Leave a Reply