চিত্রজগতের বড় ভাই, বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা ১৭ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফারুকের ভাতিজি আসমা পাঠান রূম্পা।২০২১ সালের ৪ মার্চ সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। চেকআপের পর তখন তার ইনফেকশন ধরা পড়লে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন এই অভিনেতা। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ফারুক। প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন ফারুক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন মিষ্টি মেয়ে কবরী। কবরী ও করোনা পরবর্তীকালীন সময়ে মারা যান। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার আলোর মিছিল এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দুটি ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়। ওই বছর ‘লাঠিয়াল’র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ‘নয়নমণি’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশকিছু সিনেমায় ‘মিয়া ভাই’খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয় কথাটা শোনার পরেই বুকের ভিতর ছ্যাত করে উঠলো, চিত্র জগতের বাইকে রেখে চলে গেলেন আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী চিত্রনায়ক ফারুক। মিয়া ভাই ফারুক ও তার পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানাচ্ছি। ফারুক ভাইয়ের সহ-অভিনেতা ও সাংবাদিক নাসিম রুমি বলেন-আমার ৩য় মাইলস্টোন চলচ্চিত্র “মাটির মায়া” ছায়াছবিতে প্রথম ফারুক ভাই এর সাথে আমার অভিনয়, এর পর অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কতো মধুময় স্মৃতি যা ভেবে চোখ বারবার অশ্রুসিক্ত হয়ে যাচ্ছে কান্নায় বুক ভার হয়ে যাচ্ছে। ফারক ভাই আপনি বেচে থাকবেন আপনার অনবদ্য শ্রেষ্ঠ কর্মের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের স্বপ্নিল আকাশে কোটি দর্শকের হৃদয়ে অনন্তকাল। ফারুক ভাই অভিনীত উল্লেখ্যযোগ্য সুপারহিট ছায়াছবিগুলো হলোঃ মাটিরমায়া, প্রিয়বান্ধবী, ছোট মা, চোখের মনি, সখি তুমি কার, মাসুম, প্রতিদ্বন্দ্বী, সুখের সংসার, মেহমান, ভাগ্যলক্ষ্মী, রক্তেরবাধন, অন্ধবধু, ফুলেশ্বরী। ছবি মোস্তাফিজ মিন্টু।
Leave a Reply