ঢাকা শহরের কোলাহল আর ব্যস্ত জীবন থেকে মুক্তি পেতে চান? এক টুকরো নৈসর্গিক শান্তির জন্য গাজীপুরের ‘কাতুরিয়া পদ্মবিল’ হতে পারে আপনার আদর্শ গন্তব্য। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা এই বিলটি প্রতিটি প্রকৃতিপ্রেমীর মন জয় করতে বাধ্য। গ্রীষ্ম থেকে শীতের শুরু পর্যন্ত পদ্মের অপরূপ শোভা এবং বর্ষাকালে শাপলার ফুলের সমারোহে ভরপুর কাতুরিয়া বিল পর্যটকদের জন্য এক স্বর্গীয় স্থান।
পদ্ম ও শাপলার অসাধারণ মিলন
গাজীপুরের প্রাকৃতিক কোলে বিস্তৃত প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার আয়তনের এই বিলটির দুই পাশ জুড়ে বিরাজমান পদ্ম ও শাপলার অনন্য মিলন। বিলের পূর্ব দিকে শোভা পাচ্ছে লাল ও সাদা শাপলা, আর পশ্চিম দিকে পদ্মের সৌন্দর্য যেন রঙিন রাজত্ব কায়েম করেছে। সূর্যের আলো ফুটতেই যখন পদ্মের পাপড়ি মেলে ধরা শুরু হয়, তখন পুরো বিলটি যেন এক স্বপ্নরাজ্যে পরিণত হয়। অন্যদিকে, শাপলার রূপ ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রকৃতির রহস্যময় সৌন্দর্যকে সার্থক করে তোলে।
যাতায়াত ও নৌকা ভ্রমণের সুবিধা
ঢাকা থেকে কাতুরিয়া পদ্মবিলে আসা বেশ সহজ। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলগেট পর্যন্ত বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬০-৭০ টাকা হতে পারে। এরপর, স্থানীয় পরিবহনে মাত্র ৪০-৫০ টাকার বিনিময়ে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন কাযাহাজীর কাতুরিয়া ব্রিজের কাছে। এখান থেকেই শুরু হয় দৃষ্টিনন্দন পদ্মবিলের যাত্রা।
বিল ভ্রমণের জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া নেয়া যায়। এক ঘণ্টার জন্য নৌকা ভাড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। তবে নৌকাগুলোর ধারণক্ষমতা সীমিত হওয়ায় খুব বেশি সংখ্যক পর্যটক একসাথে ভ্রমণ করতে পারেন না। নৌকা নিয়ে বিলের চারপাশ ঘুরে পদ্ম ও শাপলার সৌন্দর্য অবলোকন করার অভিজ্ঞতা সত্যিই অভূতপূর্ব।
প্রকৃতির সময়ভিত্তিক রূপ
কাতুরিয়া পদ্মবিলের সৌন্দর্য সময়ের সাথে সাথে বদলে যায়। ভোরের সূর্যের আলো যখন বিলের ওপর পড়ে, পদ্ম ফুলগুলো তার পাপড়ি মেলে বিলকে এক রঙিন চাদরে ঢেকে দেয়। অন্যদিকে, শাপলা ফুল ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত তার পূর্ণ রূপে ফুটে থাকে, যা দর্শনার্থীদের মন জয় করে। পদ্মের সৌন্দর্য সারাদিনই উপভোগ করা যায়, যা পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।
কাতুরিয়া পদ্মবিল শুধুমাত্র একটি প্রাকৃতিক স্থান নয়, এটি একটি মানসিক প্রশান্তির কেন্দ্র। কোলাহলপূর্ণ শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে কিছুক্ষণ মুক্তি পেতে প্রকৃতির এমন নৈসর্গিক রূপের মাঝে সময় কাটানো এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে। পদ্মবিলের নীরবতা, শাপলা ও পদ্মের স্নিগ্ধতা, আর নৌকায় ভ্রমণ আপনাকে এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
Leave a Reply