ফাইভজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন প্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর প্রভাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতে স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে ৮-১০ শতাংশ। বছরের বাকি সময়েও বিক্রি ঊর্ধ্বমুখী থাকার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ ও সাইবারমিডিয়া রিসার্চের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর ইটিটেলিকম। কাউন্টারপয়েন্টের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশটিতে স্মার্টফোন বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে সিএমআরের বক্তব্য, এ সময় বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়ার দেশটিতে বিক্রির দিক থেকে প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠে এসেছে ভিভো। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির বাজার হিস্যা ছিল ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি বছর তা ১৯ দশমিক ২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে ফাইভজি, সিএমএফ (কালার, ম্যাটারিয়াল, ফিনিশ) ও ছবি ধারণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কোম্পানির বাজার হিস্যা বাড়াতে সহায়তা করেছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শাওমি। কোম্পানির বাজার হিস্যা ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও স্যামসাংয়ের বাজার হিস্যা ২০ দশমিক ৩ শতাংশে থেকে কমে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে বলে কাউন্টারপয়েন্ট সূত্রে জানা গেছে। সিএমআরের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ১৯ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষে রয়েছে স্যামসাং। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শাওমি এবং শূন্য শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিভো। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির বাজার হিস্যা ১৭ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দুটি বাজার গবেষণা সংস্থার তথ্যানুযায়ী, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে অপো ও রিয়েলমি। কাউন্টারপয়েন্ট ও সিএমআরের তথ্যানুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে বিক্রি হওয়া মোট স্মার্টফোনের ৭০-৭১ শতাংশই ফাইভজি। গবেষণা বিশ্লেষক শুভাম সিং বলেন, ‘২০২৪ সালের শুরুতে অরিজিনাই ইকুইপমেন্ট উৎপাদনকারীরা ভালো সূচনা করতে পেরেছে। ইনভেন্টরি বা মজুদ ভালো থাকায় কোম্পানিগুলো বিভিন্ন চ্যানেলে নতুন ডিভাইস বাজারজাত করতে পেরেছে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে ব্যয় কমে আসায় বিক্রি কিছুটা নিম্নমুখী ছিল।’ অন্যদিকে এক-চতুর্থাংশ হিস্যা নিয়েও দামের দিক থেকে বাজারের শীর্ষে ছিল স্যামসাং। কোম্পানিটির সর্বোচ্চ গড় বিক্রিমূল্য ছিল ৪২৫ ডলার বা ৩৫ হাজার ৪০০ রুপি। ২০ হাজার রুপির সেগমেন্টেও এগিয়ে ছিল প্রযুক্তি জায়ান্টটি। সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট শিল্পী জেইন বলেন, ‘দামের দিক থেকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতের বাজারে ভালো অবস্থানে ছিল অ্যাপল। প্রিমিয়াম থেকে শুরু করে সাশ্রয়ীমূল্যের ডিভাইস সেগমেন্টও নিয়ন্ত্রণে রেখেছে কোম্পানিটি।‘ সিএমআরের ইন্ডাস্ট্রি ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের বিশ্লেষক ভাস্কর নেগি বলেন, ‘২০২৪ ও তার পরবর্তী সময়ে সাশ্রয়ীমূল্যের ফাইভজি ডিভাইসের কারণে প্রতিযোগিতা আরো তীব্র হবে। যেসব কোম্পানি সাশ্রয়ী দামে ফাইভজি নেটওয়ার্ক, উন্নত এআই ফিচার ও ক্রস ডিভাইস এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করবে তারা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে।’
Leave a Reply