1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
মহেশখালীতে প্যারাবন ধ্বংস করে তৈরি হচ্ছে চিংড়িঘের ও লবণ মাঠ; অতঃপর প্রশাসনের অভিযান - দৈনিক আমার সময়

মহেশখালীতে প্যারাবন ধ্বংস করে তৈরি হচ্ছে চিংড়িঘের ও লবণ মাঠ; অতঃপর প্রশাসনের অভিযান

সুমন চন্দ্র দে, মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত একমাত্র পাহাড় দ্বীপ মহেশখালী উপজেলা। এই উপজেলাটির চতুর্দিকে রয়েছে অসংখ্য প্যারাবন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে মানুষের জানমাল রক্ষার কবজ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এই প্যারাবন। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহল এ বন কাটায় ঝুঁকিতে পড়ছে এ দ্বীপের চার লাখ মানুষ।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙা উপকূলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অধীনে থাকা প্যারাবন দখল করে চিংড়িঘের ও লবণ উৎপাদনের মাঠ তৈরির হিড়িক পড়েছে। লুট করা হচ্ছে প্যারাবনের বাইন ও কেওড়াগাছ।
কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী এক ঘূর্ণিঝড়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে মহেশখালী দ্বীপে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটে, যা উপকূলীয় মানুষের মনে এখনও দাগ কেটে আছে। স্বজন হারানোর বেদনায় দিনটিকে এখনও স্মরণ করে তারা। ঘূর্ণিঝড় থেকে দ্বীপাঞ্চলের মানুষকে রক্ষার জন্য ওই ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই বেড়িবাঁধ তৈরি করা হয়। তারপর থেকে বেড়িবাঁধ ও তার বাইরে থাকা বিশাল আকৃতির প্যারাবনই এখানকার মানুষের জানমাল রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে আসছে। এর বাইরে বন বিভাগ কর্তৃক বিভিন্ন জায়গায় প্যারাবন সৃজন করা হয়।
মূলত প্যারাবন কেটে ঘের নির্মাণের এসব পরিবেশবিরোধী কাজে মামলার আসামিদের পেছনে রয়েছে জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের হাত। এ কারণে কোনোভাবেই থামছে না প্যারাবন ধ্বংসচক্রের পরিবেশবিধ্বংসী কাজগুলো। বনবিভাগের অভিযানের পরপরই রাতের অন্ধকারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দলবেঁধে প্যারাবন কেটে ঘের নির্মাণের কাজ এখনও চালু রেখেছে তারা।
লবণ মাঠের জন্য প্যারাবন দখলকে কেন্দ্র করে ২ মার্চ দুই পক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এরপরও প্যারাবন দখল থেমে নেই।
ঘটিভাঙার জেলে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পাঁচ মাস আগেও এলাকার কয়েক শ মানুষ প্যারাবনে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন চোখের সামনে প্যারাবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ২৩ মার্চ (শনিবার) সকালে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মীখি মারমা নেতৃত্বে মহেশখালী উপজেলা ভূমি কমিশনার, পুলিশ, আনসার, কোষ্ট গার্ড সহ একটি বিশাল টিম কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গায় প্যারাবন নিধন করে  সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে চিংড়ি ঘের নির্মানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান কালে কোন ভূমিদস্যু ও বনদস্যুদের কাউকেও ধরতে পারেননি এই টিম।
এসময় সাংবাদিকদের উপজেলা ভূমি কমিশনার জনাব বলেন, ঘটিভাঙ্গা সহ মহেশখালী চতুর্দিকে এই প্যারা বন এই দ্বীপটিকে রক্ষা করে আসছে। এই অভিযানের বিষয় জানতে পেরে ভূমিদস্যুরা আগে থেকে সরিয়ে পড়েছিল। এই অভিযান চলমান থাকবে এবং এই ভূমিদস্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করবো। তিনি আরো বলেন- উপজেলা প্রশাসন ও অত্র ইউনিয়নের কমিউনিটি জনগনের মাধ্যমে এই প্যারাবনকে রক্ষা করা পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।
মহেশখালী বনবিভাগের উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা এসএম আনিসুর রহমান বলেন, ‘অভিযানের পরে মামলা দিয়েছি। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে আমরা চলে আসার পরপরই আসামিরা প্যারাবন কেটে ঘের নির্মাণের কাজে আবারও নেমে পড়ে। মূলত জনবলের অভাবে ঠিকঠাকমতো অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com