1. : admin :
ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদের ‘অপরাধের সত্যতা’ পেয়েছে পুলিশ - দৈনিক আমার সময়

ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদের ‘অপরাধের সত্যতা’ পেয়েছে পুলিশ

ইমন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
    প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। একই সঙ্গে তার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন একাধিক ছাত্রী।ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে আজিমপুর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে (৪৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। 

পুলিশ বলছে, ৪৮ বছর বয়সী গ্রেফতার শিক্ষক মুরাদ একাধিক ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়েছে। তাদেরকে জড়িয়ে ধরে চুম্বনও করেছেন এই শিক্ষক। সর্বশেষ গত বছরের ১৯ নভেম্বর স্কুলে পরীক্ষা শেষে শিক্ষক মুরাদের কোচিং সেন্টারে পড়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় একজন ছাত্রীকে। বিকেলে কোচিং শেষে অন্য ছাত্রীরা চলে গেলেও একজন ছাত্রীকে শিক্ষক মুরাদ কৌশলে বসিয়ে রেখে নামাজের রুমে যেতে বলে। এরপর তাকে জোর করে জড়িয়ে ধরে যৌন নির্যাতন করে।

পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে মুরাদ বলে- ‘আমি তোমার বাবার মতো। এই ঘটনা জানাজানি হলে তোমার মা-বাবার সম্মানহানি হবে এবং স্কুল থেকে তোমাকে বের করে দিবে’।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেবুরুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, আজিমপুর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকার কোচিং শেষে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। অল্প বয়স্ক এসব ছাত্রীরা ভয়ে প্রকাশ করেনি। একজন ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারের এ ধরনের অশালীন আচরণের ঘটনা স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ছাত্রীর মাসহ আরও বেশ কয়েকজন অভিভাবক নিজ নিজ সন্তানসহ স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলে ডেকে নিয়ে আসে। অভিভাবকবসহ স্কুলের সাবেক ও বর্তমান অধ্যয়নরত অনেক মেয়ের সঙ্গে একই অশালীন আচরণ করে শ্লীলতাহানী ঘটিয়েছে বলে বেস্ক কয়েকজন ছাত্রী জানায়।

আরও অনেক ছাত্রীদের সঙ্গে এই ধরণের অশালীন কার্যকলাপের বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্কুলের প্রাক্তন এবং বর্তমান অসংখ্য ভুক্তভোগী ছাত্রী ও অভিভাক শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি স্কুলের সামনে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ এবং প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্স করেন।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা মামলা দায়েরের পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১টার দিকে কলাবাগান থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, দুটি সিম কার্ড এবং একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। এছাড়া একাধিক ছাত্রীর বেশকিছু অডিও রেকর্ডিং ও কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে। যা যাচাই-বাচাই অব্যাহত আছে।

এ ঘটনার পর অভিভাক অনেকেই চিন্তিত। তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিভাকদের উদ্দেশ্যে কোনো মেসেজ আছে কি-না জাতে চাইলে তিনি বলেন, নারী ও শিশুর বিষয়ে পুলিশ অত্যন্ত সংবেদনশীল। এ ধরণের ঘৃণ্য অপরাধ যদি কেউ করে থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। যেসব শিক্ষার্থী স্কুল-কোচিংয়ে যাচ্ছে তারা স্বাভাবিকভাবে যাবে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এক্ষেত্রে বদ্ধ পরিকর।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com