ত্রিমুখী প্রতিযোগিতার আভাস নিয়ে জমে উঠেছে বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই লড়াইয়ে এগিয়ে মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। দশ ইউনিয়নের প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটারের কাছে বিনয়ী ও ভদ্রলোক হিসেবে ইতিমধ্যেই মামুনের অবস্থান বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাছাড়াও সামাজিক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তিনি আলোচনায় রয়েছেন সকলের শীর্ষে। তবে অনেকটা নিরব ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রচারণা চালাচ্ছেন চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চার বারের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হবার সুবাধে এক ধরনের বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকদের একটা অংশ কাজ করছে তার পক্ষে। তার উপর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সমর্থনও তাকে ঘীরে। ফলে তার ব্যানার পোস্টারে রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ছবি। এদিকে কিছুটা বেকায়দায় থাকলেও সাংবাদিকদের বড় একটা অংশের সমর্থন নিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর এসএম জাকির হোসেন জোড় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আরো দুজন প্রার্থীদের একজন সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান মধু এবং শিক্ষক আব্দুল মালেক এর প্রচার প্রচারণা রয়েছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত আলোচনায় তেমন আসতে পারেনি সদরের মানুষের কাছে। তারপরও নির্বাচন যখন হবেই তখন একজন বিনয়ী, ভদ্রলোক এবং বংশীয়ভাবে সুপরিচিত প্রার্থী চান দশ ইউনিয়নের প্রায় প্রতি জন মানুষ। সেদিক থেকে খান মামুনের প্রতি ইঙ্গিত তাদের। সরেজমিনে সদর উপজেলার চাঁদপুরা, টুঙ্গিবাড়িয়া, চরমোনাই, চন্দ্রমোহন, শায়েস্তাবাদ ও কড়াপুর ঘুরে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে এসব এলাকায় ইতিমধ্যেই নিজের অবস্থান শক্তিশালী করে নিয়েছেন খান মামুন। এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারদের বেশিরভাগ অংশ তার পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন এবং কড়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার বাবু সরাসরি খান মামুনকে জয়ী করতে কাজ করছেন বলে জানান। এদিক থেকে কৌশলী অবস্থানে আছেন চন্দ্রমোহন ও টুঙ্গিবাড়িয়ার চেয়ারম্যান। তবে তারাও যে খান মামুন এর পক্ষে যাবেন তা ইতিপূর্বে দেয়া তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিলো। কেননা তারা বলেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী যার পক্ষে যাবেন তার প্রতি থাকবে বেশিরভাগ চেয়ারম্যানদের সমর্থন। আর এ বিষয়ের খোলাসা করেছেন জাহিদ ফারুক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। তারা কাজ করছেন খান মামুন এর পক্ষে। আইনজীবী আফজালুল করিম, আহমেদ কবীর, লস্কর নুরুল হকসহ সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রায় সবাইকে খান মামুনকে নিয়ে জনসভা করতে দেখা গেছে। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পরেন এসএম জাকির হোসেন। যে কারণে তাকে বারবার প্রতিমন্ত্রী কাছে ছুটে যেতে দেখা গেছে বলে জানান অনেকে। এদিকে মহানগর আওয়ামী সহ-সভাপতি এ্যাড. আফজালুল করিম বলেছেন সরকারি স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কোনো মেয়র, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচনে কাউকে সমর্থন করতে পারবেন না। কিন্তু আমরা তাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি খান মামুনকেই সমর্থন করছি। তাই এ নিয়ে কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয় বলে জানান আফজালুল করিম। তিনি আরো বলেন, খান মামুন একজন ত্যাগী নেতা। তিনি ইতিপূর্বেও উপজেলা নির্বাচন করেছিলেন, তাই ১০ ইউনিয়নের মানুষের কাছে তিনি আগে থেকেই সুপরিচিত। তাছাড়া উপজেলার বেশিরভাগ মসজিদ মন্দির ও স্কুল কলেজের উন্নয়নে খান মামুন এর অবদান রয়েছে বলে জানান আফজালুল করিম। এদিকে গত ১৯ এপ্রিল পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বরিশালে আসলে তিনজন প্রার্থীকেই তার কাছে ছুটে যেতে দেখা গেছে। নিরপেক্ষ ভোটারদের বিশ্লেষণ হচ্ছে শেষ পর্যন্ত খান মামুন আর ছবির মধ্যেই হবে তীব্র প্রতিযোগিতা। কেননা এসএম জাকির থেকে প্রেসক্লাবের সাইনবোর্ড সরিয়ে দিলে তাকে মূল্যায়নের মতো আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না বলে জানালেন বরিশাল মহানগর আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহ কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা।
Leave a Reply