ঢাকার ধামরাইয়ে কোন শিক্ষক উপস্থিত না থাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরীই গত তিনদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও স্বজনপ্রীতি এবং ম্যানেজ সিস্টেমের কারনে এ অবস্থার উপক্রম হয়েছে বলে অনেকেই ধারনা করছেন।
বিষয়টি জানেন না প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আশুতোষ মন্ডল । গত রবিবার ও সোমবার দপ্তরি হযরত আলী বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম চালালেও
আজ মঙ্গলবার দপ্তরী আবার নিজে বহিরাগত লোক এনে স্কুলে রেখে তিনিও চলে যান। এ নিয়ে এলাকায় চলছে অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা।
এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের ৯৭ নং রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার রোয়াইল ৯৭ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক কাগজে কলমে থাকলেও বিভিন্ন কারণে
আজ বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন না। বিদ্যালয়ের দপ্তরি হযরত আলী গত রবিবার ও সোমবার স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম চালালেও আজ মঙ্গলবার (৭ মে) তিনি উপস্থিত হতে না পেরে তার এক পরিচিত ভাইকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত রেখেছেন। শিক্ষকরা না থাকায় শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষ ছেড়ে মাঠে খেলাধুলা করতে দেখা যায়।
কেন বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকও নেই জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের দপ্তরি হযরত আলী জানান, বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষকের মধ্যে সেলিনা আক্তার নামে এক শিক্ষক পিটিআই ট্রেনিংয়ে গেছেন। মোনালিসা হক কনা নামে আরেক শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং শর্মিষ্ঠা দাস সুমা নামে এক শিক্ষক ডেপুটেশনে অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছেন। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা ও সহকারী শিক্ষক জহুরা জেসমিন নামের দুই শিক্ষক ও ট্রেনিং এ আছেন। যার কারণে দপ্তরি হযরত আলীকে একাই বিদ্যালয় পরিচালনা করতে হচ্ছে । কিন্তু তিনি আজ আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ে চলে আসেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নেপাল চন্দ্র পাল বলেন, বিদ্যালয়ে আছেই মাত্র দুই জন শিক্ষক। আবার তারাও রয়েছেন ট্রেনিংয়ে। কিভাবে শিক্ষক শূন্য একটি বিদ্যালয় চলতে পারে।
তবে রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশুতোষ মন্ডল বলেন, আমি বিষয়টি আজকেই জানতে পেরেছি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা বলেন, বর্তমানে আমরা দুই জন শিক্ষক ট্রেনিংয়ে আছি। বাকিরা বিভিন্ন কারণে ছুটিতে অনুপস্থিত। তবে শর্মিষ্ঠা দাস সুমা ডেপুটেশনে অন্যত্র চাকরি করছেন এ বিষয়ে তার কাছে কোন প্রমাণপত্র নেই।
ধামরাই উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইনকে প্রশ্ন করলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি না লেখার জন্য্ বলেন এবং সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাজমুন্নহারকে অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বার বার তার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মো: আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আজিজ বলেন, স্কুল কখনো শিক্ষক শূন্য থাকতে পারে না। বিষয়টি দেখে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply