1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
জুয়া খেলে বাগমারায় জিরো থেকে হিরো কে এই ফিরোজ? - দৈনিক আমার সময়

জুয়া খেলে বাগমারায় জিরো থেকে হিরো কে এই ফিরোজ?

আল আমিন হোসেন, রাজশাহী
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হঠাৎ করে জন্ম নিয়েছেন নব্য কোটিপতি। আলাউদ্দিনের চেরাগের মতো রাতারাতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার মালিক। দৃশ্যমান কোন আয়ের উৎস না থাকলেও কোটিপতি বনে যাওয়া কে এই ফিরোজুল ইসলাম ফিরোজ? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার শিবদেবপাড়ার সাইদুর রহমানের ছেলে ফিরোজুল ইসলাম ফিরোজ। তাঁর জন্ম ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখ। প্রায় ২৮ বছরের এক যুবকের হঠাৎ কোটিপতি হওয়ার গল্পটা এখন সবার জানা। তার বাবা পেশায় একজন দিন মজুর ছিলেন। মা প্রকাশযোগ্য তেমন কোনো কর্মে লিপ্ত ছিলেন না। ফিরোজ এসএসসি পরীক্ষার আগে আজাহার মেম্বারের মেয়ে নিলুফাকে পালিয়ে বিয়ে করেন। বংশ পরিচয় না থাকায় মেম্বার সে বিয়ে মেনে নেয়নি। পরবর্তীতে তাদের প্রেমের ঘটক শাপলাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন ফিরোজ। সংসার চালাতে দিন মজুরির কাজ শুরু করেন। অভাবী সংসারে বাধ্য হয়ে যৌতুকের জন্য তার স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতন করেন এই ফিরোজ। মাত্রাতিরিক্ত নির্যাতনে স্ত্রীর একটি চোখ নষ্টের উপক্রম হয়। পরে শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে অটো কিনে তা চালাতেন তিনি। বেপরোয়া চলাফেরায় সে সময় অনেক টাকায় ঋণি হয়ে পরেন ফিরোজ। ঋণের বোঝা এতোটাই ভারী হয়েছিলো বাধ্য হয়ে ২০২১ সালে ঢাকায় পালিয়ে যায় ফিরোজ। ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালাতে গিয়েই তার ভাগ্য খুলে যায়। মাত্র ১ বছরে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি।
২০২২ সালে বাগমারায় এসে হঠাৎ তার বিঘা বিঘা জমি ক্রয় ও দামি গাড়িতে চলাফেরা সবাইকে অবাক করেছে। পরবর্তীতে ফিরোজের ভায়রা সর্বহারা ঝিকড়া ইউ.পি লিডার পিরুলী সেনপাড়া গ্রামের মৃত জব্বার আলীর পুত্র শহিদকে একটি গাড়ি উপহার দেয় ফিরোজ। গাড়ি উপহার ও টাকা দেখে শহিদের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে পরিচয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। পরিচয় পর্ব শেষে এলাকায় শহিদের ন্যায় ক্ষমতা পেতে নির্বাচনে ওই প্রভাবশালী নেতাকে কোটি টাকা প্রদান করেন। এরপর প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তার চলাচল শুরু হয়। প্রভাবশালী ওই নেতার ছত্রছায়ায় সে হয়ে ওঠে বেপরোয়া। দল-বল নিয়ে নেতার সাথে থাকেন।
ফিরোজ তার জুয়া ও অবৈধ পথে আয় করা টাকা বৈধ করতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া শুরু করেন। এরপর সবুজ বাংলা নামে একটি ঋণ কার্যক্রম সমিতি নামে সুদের ব্যবসা শুরু করেন। বাগমারা তার অবৈধ কাজে পেশি শক্তির জোগান দেয় শহিদ গং। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত শহিদ। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় বেপরোয়া শহিদ ও ফিরোজ। মাসোহারা দেয় প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক মহলেও।
অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসে নেমে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা। অনেকেই তার ক্ষপ্পরে পরে নি:স হয়ে পাড়ি জমিয়েছে ঢাকায়। এখন তিনি এলাকার সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত হতে টাকা দিয়ে বিভিন্ন মাহফিলে অতিথি হয়। এলাকায় নিজস্ব গাড়িতে চলাফেরাসহ সন্ত্রাসী বাহিনী থাকে বডিগার্ড হিসেবে। সর্বহারা শহিদ গং এর নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্মের লিপ্ত সে। শহিদ সর্বহারার লিডার। তার নামে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আছে। স্থানীয় ওই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ভয়ে এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না কেউ। বর্তমানে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নানা অপকর্মে এরাই থাকছেন সব সময়।
গত মাসে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে এসব বিষয় নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন বাগমারার ১২ নং ঝিকড়া ইউপি’র সাধারণ জনগণ।
কথা বলতে একাধিক বার ফোন দিলেও অভিযুক্ত ফিরোজুল ইসলাম ফিরোজ ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপর অভিযুক্ত শহিদ বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আপনারা এলাকায় এসে খোঁজ নিলে বিষয়টি জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি বলেন, আমি এমন কোনো অভিযোগের কপি এখন অবদি পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
উল্লেখ্য, সর্বহারা শহিদ চক্রের অন্যতম সদস্য একই গ্রামের মুনসুর আলী ছেলে মোঃ জাকির হোসেন,  তেগাছীসেনপাড়া গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাবু ও ইয়াকুব আলীর ছেলে মোঃ জিল্লুর রহমান জিল্লু তারা একই হত্যা মামলার আসামি। জিল্লুর নাম মাত্র কালিগঞ্জ বাজারে চায়ের দোকান আছে উক্ত চায়ের দোকানে প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন শলা পরামর্শ সহ বিভিন্ন অবৈধ কাজ কর্ম চালায় সর্বহারা শহিদ চক্র বলেও অভিযোগে উল্লেখ্য আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com