1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
কালিয়াকৈরে আবাধি জমি ধব্বংসের প্রতিবাদে কৃষক-কৃষাণীদের বিক্ষোভ - দৈনিক আমার সময়

কালিয়াকৈরে আবাধি জমি ধব্বংসের প্রতিবাদে কৃষক-কৃষাণীদের বিক্ষোভ

মোঃ মজনু আহমেদ জীবন, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রাতের আধারে ফসল ও সরকারি সড়ক নষ্ট আবার আবাধি জমি ধব্বংস করে প্রকাশ্যে সমুদ্র বানানোর হুমকি মাটি খেকুদের। তাদের হুমকিতে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন সংখ্যালঘু পরিবার। এসবের প্রতিবাদ ও আবাধি জমি রক্ষায় বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক-কৃষাণীরা। (১৯ মার্চ) মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বামনাবহ এলাকায় এমন প্রতিবাদ জানানো হয়। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী কৃষক-কৃষাণী সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের বামনাবহ এলাকায় কোনো শিল্পকারখানা নেই। একেবারেই প্রত্যন্ত  এলাকার গ্রাম এটি। অন্য কোনো আয় উপার্জনের পথ না থাকায় কৃষির ওপর নির্ভরশীল এখানকার কৃষক-কৃষানীরা। প্রতি মৌসুমে শরিষা, বোরো ধান, ভুট্রা, পাটসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেই চলে তাদের সংসার। কিন্তু সেখানেও হায়েনার মতো নজর পড়েছে মাটি খেকোদের। মাত্র দুই রাতে ফসল ও শাহবাজপুর-বামনাবহ-দক্ষিন পাকুল্লা সদ্য মেরামতকৃত সরকারি সড়ক নষ্ট এবং দুর্ঘটনা রক্ষার সাংকেতিক সড়কপিলার ভেঙ্গে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়। পাশের গোসাত্রা এলাকার মাটি খেকু ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা ওই রাস্তা বানিয়ে ফসলি জমির মাটি লুটের চেষ্টা করছেন। ভুক্তভোগী কৃষক-কৃষাণীরা নিষেধ করলে উল্টো তাদের গালিগালাজসহ নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখান ওই মাটি খেকো ও তার সহযোগীরা। শুধু তাই নয়, প্রশাসন তার পকেটে জানিয়ে মাটি কেটে এখানে সমুদ্র বানানোর হুমকিও দেন মাটি খেকো ওবায়দুর। তাদের হুমকিতে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবার। এসবের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ করেছে প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষক-কৃষাণীরা। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রায় ৭৫ জন কৃষক-কৃষাণী স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ করেছেন।

এসময় কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের চলাচলের একমাত্র সরকারি সড়ক নষ্ট ও সড়কপিলার ভেঙ্গে ক্ষমতার দাপটে ফসল ও কৃষি জমি নষ্ট করে মাটি কাটার পায়তারা করেছেন মাটি খেকোরা। বাধা দিলে মাটি খেকোরা বলেন কেউ এলে মাইরা হালামু, কাইটা হালামু। কৃষাণী সিমা সরকার, অনিতা সরকার ও মনি সরকার বলেন, আমরা হিন্দু-সম্প্রদায়ের লোক বলে যেন আমাদের ওপর বেশি জুলুম করছে। আমাদের ফসল ও কৃষি জমি নষ্ট করে রাস্তা বানিয়েছে মাটি খেকোরা। মনতাজ উদ্দিন বলেন, এখানে শাকিল মোস্তফা নামে এক ব্যক্তির জমির মাটি কাটবে। কিন্তু একটা জমির মাটি কাটলে অন্য জমিও ভেঙ্গে পড়বে। সিরাজ উদ্দিন বলেন, ক্ষেতের একটা গুছা নষ্ট হলে আমাগো কলিজায় লাগে। কিন্তু ওরা ক্ষেত নষ্ট করছে। মোরশেদা বেগম বলেন, আমাদের  জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা গরীব মানুষ বলে আমাদের এতো ক্ষতি করতেছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, যেভাবেই হোক আমাদের কৃষি জমি রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করুণ। শুধু এরাই নয়, আরো এমন ভুক্তভোগী কৃষক-কৃষাণীরা বলছেন, শুধু এখানেই নয়, বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিভিন্ন এলাকার মাটি খেকোরা। মাটি খেকোদের থামানো না গেলে এক সময় ফসল শূন্য হবে মাঠ, দেখা দিবে খাদ্য সংকটের। আমরা ঘরের ধানের ভাত খেতে চাই, আমরা কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধ চাই। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় কৃষক-কৃষাণীরা।

অভিযুক্ত ওবায়দুর রহমান জানান, অভিযোগের পর তখন সাবেক ইউএনও জকি সাহেবের কাছে আমি ও বাদীরা গিয়েছিলাম। ওই ইউএনও জকি সাহেব বলেছিলেন কেনা সম্পত্তিতে মাটি কাটা বন্ধ হবে না। ওই ইউএনও মাটি কাটার অনুমতি দিয়েছিলেন জানিয়ে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার সাংবাদিকদের বার বার অনুরোধ জানান এই অভিযুক্ত ব্যক্তি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার আহম্মেদ জানান, বামনাবহ এলাকার কৃষক-কৃষাণীরা একটি অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মাটি কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com