চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আনসার সদস্যের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাকিল আহাম্মদের আদালতে শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন-শরিফুল ইসলাম, আহসান হাবিব, মনিরুজ্জামান, হাসিবুর রহমান, নাসির মিয়া ও শফিকুল ইসলাম। এদিন কারাগারে আটক ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক সাইমুল ইসলাম তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। এর আগে গত ২৬ আগস্ট শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক শামীম মীর মালত বাদী হয়ে ২০৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত তিন হাজার আনসার সদস্যকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট রাত ৯ টার সময় বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় কিছু আনসার সদস্যরা পল্টন মডেল থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধ অমান্য করে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টা তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এছাড়াও অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো একটি কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন। কিন্তু সাধারণ আনসাররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ করে দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। বাংলাদেশের সাধারণ আনসাররা একটি সু-শৃঙ্খলিত আনসার বাহিনীর সদস্য। সচিবালয় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা কেপিআই জানা সত্ত্বেও আনসার সদস্যরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থলে আসলে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অসংখ্য পথচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা গুরুতর আহত হন। ওই আনসার সদস্যরা রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে দেয় এবং রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, অগ্নি-সংযোগ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাঙচুর করে।
Leave a Reply