কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনদ্বীপে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের সময় কথা-কাটাকাটি জেরে সনজিদা বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রবিবার (২১ মে) সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ত্রাণ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে দেবর নুরুল ইসলামের (৪২) ঘুষিতে সনজিদা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সনজিদা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন বলে স্বজন ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। নিহত সনজিদা সেন্ট মার্টিনের পশ্চিমপাড়া এলাকার নজির আহমদের স্ত্রী। এ ঘটনায় দেবর নুরুল ইসলামের ভাষ্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের দুই হাজারের বেশি বসতঘর ভেঙে গেছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়।
রবিবার সকাল ৮টার দিকে ত্রাণ নিয়ে দেবর নুরুল ইসলামের সঙ্গে সনজিদার কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সনজিদা নিজের বাড়ির দিকে যেতে চাইলে নুরুল ইসলাম একটি ঘুষি মারেন। এতে সনজিদা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে স্পিডবোট যোগে সকালে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রবিবার দুপুরে সেন্টমার্টিনদ্বীপ বাজার এলাকায়
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাসালি বিনতে ফয়েজ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর স্বজনেরা তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছেন।
এই ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোটে ফোনে তাহাকে পাওয়া যায় নাই, ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শামসুল ইসলাম বলেন, দেবরের সঙ্গে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে সনজিদা মাটিতে লুটে পড়েন। এরপর তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সনজিদা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। নিহত সনজিদার মেয়ে শাহিনা আক্তার বলেন, তাঁর মা আগে থেকেই হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। আজ সকালবেলা কথা–কাটাকাটির জেরে তাঁর চাচা ঘুষি মারলে মা মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা যান।
দেবরের ঘুষিতে নারীর মৃত্যুর বিষয়টি জানেন না সেন্টমার্টিনদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সেলিম হোসেন। তিনি বলেন, এখনো এমন কোনো খবর পাননি। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এমন কোনো অভিযোগও আসেনি।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, ত্রাণ নিয়ে দেবরের সঙ্গে প্রথমে কথা–কাটাকাটি হয় সনজিদার। এরপর দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে মাটিতে পড়ে সনজিদার মৃত্যু হয়েছে। সনজিদা দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। সম্ভবত এ কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply