আছরের নামাজের পরপরই ক্র্যাচে ভর দিয়ে একপায়ে হেঁটে ইফতার করতে আসছেন লাবলু মিয়া। তাঁর মতোই সারাদিন রোজা রেখে অর্ধশতাধিক দিনমজুর, রিকশাচালক, পথচারী ও ছিন্নমূল মানুষেরা প্রতিদিন ইফতার করছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা এলাকার তরী রেস্টুরেন্টে। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে অসহায় ও গরীব রোজাদারদের জন্য বিনামূল্যে এই কার্যক্রমের আয়োজন করেছেন সমাজসেবক সাদ্দাম হোসেন অনন্ত।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ছোলা বুট, মুড়ি, পিয়াজু, আলুর চপ,পানি, খেজুর, জিলাপি দিয়ে অর্ধশতাধিক রোজাদারের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যাওয়া অসহায় পথচারী ও রিকশাচালক, অটোরিকশাচালকরা তাদের গাড়ি থামিয়ে বিনামূল্যে এই ইফতার আয়োজন উপভোগ করছেন। বেশীরভাগ অস্বচ্ছল ও প্রতিবন্ধী মানুষ এখানে ইফতারে গ্রহন করে। কেউ আবারও প্যাকেট করে ঝুলিতে নিচ্ছেন।
ইফতার আয়োজনে অংশ নেওয়া রিকশাচালক লাইবুদ্দিন বলেন, এখান থেকে যাচ্ছিলাম হঠাৎ দেখি রাস্তার পাশে ইফতার সাজিয়ে তারা বসে আছে। আমাদেরকে ইফতার করার জন্য ডাকছে। আমি রিকশা পাশে রেখে ইফতার করতে বসলাম। আমাদের খুব ভালো লেগেছে এই আয়োজন দেখে।
দিনমজুর বাশেদ মিয়া বলেন, হোটেল থেকে কিনে ইফতার খেতে হলে আমার কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ টাকা খরচ হতো কিন্তু এখানে ইফতার করতে পেরে আমার সেই টাকা খরচ হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ যাদের সহযোগিতায় ইফতার করতে পেরেছি আল্লাহ তাদের দান কবুল করুক। পুরো রমজান মাসজুড়ে এই ইফতার কার্যক্রম চলমান থাকলে আমাদের মতো মানুষদের অনেক উপকার হবে।
সমাজসেবক সাদ্দাম হোসেন অনন্ত বলেন, সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষেরা অনেক কষ্টে দিন পার হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে তাদের কথা চিন্তা করে এ ইফতারের আয়োজন করেছি। এখানে যে কেউ চাইলেই নিজ ইচ্ছায় ইফতার করতে পারবেন। আবার যারা গরিব, নিম্নআয়ের কর্মমূখী মানুষ তারা বিকেলের যেকোনো সময় ইফতারের প্যাকেট নিয়ে চলে যেতে পারেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলাম আমার সময়কে বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজসেবকরা অনেক মানবিক কাজ করে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে তারা যে আয়োজন করে সেটা খুবই প্রশংসনীয়। আমি তরুণ সমাজসেবক সাদ্দামের এই ভালো কাজকে স্বাগত জানাই।
Leave a Reply